মো. আবু রায়হানের দুটো কবিতা

মো. আবু রায়হান

নারী

নারীকে কে বলে অবলা! ওরে অবুঝের দল
নারীর আছে শক্তি সাহস বিপ্লবী হবার বল।
প্রীতিলতা-ইলামিত্র ইতিহাসের বিপ্লবী নারী
অধিকার আদায়ে দিয়েছ দুর্গম পথ পাড়ি।

নারী হয়েছে পুরুষের সঙ্গী সয়েছে ধকল
নারীর ছলনায় কত জীবন হয়েছে বিফল।
নারীর প্রেমে পুরুষ হারিয়েছে রাজ্য সিংহাসন
পথের ধূলোয় লুটিয়েছে, হৃদয়ে দিল আসন।

নারীর প্রবঞ্চনায় কত পুরুষ হয়েছে ফেরারি
প্রেম সাধনে পথে পথে ঘোরে ছেড়ে বাড়ী।
নারীর পরশে জীবনে কারো গহীন অন্ধকার,
চূর্ণ বিচূর্ণ করেছে নারী কত পুরুষের অহংকার।

নারীর সামনে নত হয়েছে কত বিশ্বজয়ী বীর।
নারীর পরশ পেতে পুরুষ কতটা উন্মুখ অধীর।
নারী হয়েছে ঘসেঠি বেগম কখনো মাদার তেরেসা
নারীর ছোঁয়ায় জীবন্ত পুরুষ, পেয়ে সেবা শুশ্রূষা।

 

অভিশাপ

যদি সহস্র বছর চরণে বসে কাঁদো
যদি সমগ্র বসুধা হয় অশ্রুতে নদও ও
তবুও ক্ষমা নেই তোমার।
যদি হাতে দাও পূর্ণিমা শোভিত চাঁদ
যদি উচ্চকিত হয় দিগ্বিদিক বজ্রনাদ,
তবুও তোমার ক্ষমা নেই।
তোমার দুচোখে দেখেছি আমি ছলনা অনুক্ষণ
সুরতে দেখেছি আমার সাথে জোচ্চুরির বাঁধ ভাঙ্গা উল্লাসের অনুরণন।
যখন আমি হৃদয় ব্যথার কাতরে সংজ্ঞাহীন, গভীর রজনীতে নিদ্রাহীন,
তখন তুমি ভেসেছো নিত্য আনন্দের জোয়ারে, নিঃসংশয়ে দ্বিধাহীন।
তোমার চিত্তে ছিল ভরা আষাঢ়ের চিরচেনা প্রমত্তা পদ্মা নদী,
আমার চিত্তে বইছিল মরু ঝড়ের তান্ডবলীলা নিরবধি।
ক্ষমা! ক্ষমা করিব কারে? জেনে শুনে যে দিল প্রশান্ত বারি সম ব্যথা?
ক্ষত বিক্ষত হৃদয়ে দিল মোর শোক মর্সিয়ার কাব্যগাথা।
ক্ষমা নেই ছলনাময়ীর যে ভাঙ্গে স্বপ্ন মোর, হৃদয় মন্দিরে কুঠার হানে,
মোর দেহে বসে মোরে আঘাতে জর্জরিত করে, হৃদয় খুনের অস্ত্র শানে।
ক্ষমায় আমি বড়ই অনুদার, বলতে পারো নিরুপায়,
আঘাতে আমি নির্বাক, পারিনা করিতে ক্ষমা তোমায়।
দিলুম বিদায় লগ্নে তোমারে অভিশপ্ত জীবনের যন্ত্রণা।
তখন শুধরে কি হবে? কি হবে করে মোর ভূয়সী বন্দনা।
যখন বইতে হবে বিরহ জগত সংসারে অসহ্য গঞ্জনা।
হও যদি তুমি চিতার উত্তাপ ছড়ানো চন্দন কাষ্ঠ
তবুও মোর হৃদয় বিগলিত হবেনা, পাবো না কষ্ট।