জয় বাংলা স্লোগানে তালা ভেঙে প্রশাসনিক ভবনে ছাত্রলীগ

জয় বাংলা স্লোগানে

সাত কলেজের সমস্যা দ্রুত সমাধান এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রলীগ। সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনও নিরসন চায় সংগঠনটি। তারা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দেয়া তালাও ভেঙে দিয়েছে। 

রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের ভেতরে অবস্থান করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ‘অ্যাকশন, অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙ্গে দাও, গুড়িয়ে দাও’-সহ নানা স্লোগান দেয়। সেখানে সমাবেশশেষে উপাচার্য কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনটি।

এর আগে,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সাত কলেজর অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে টানা ৩য় দিনের মতো আজ মঙ্গলবারও প্রশাসনিক ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তৃতীয় দিনে আন্দোলনের গতি আরো বেগবান হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অধিভুক্ত বাতিলের বিভিন্ন স্লোগানে মুখোর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। আন্দোলনে বিভিন্ন হল এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী থেকেও শিক্ষার্থীদের যোগ দিতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার সকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিভিন্ন ফ্যাকাল্টিতে তালা দেয়। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু করে সেন্ট্রাল লাইব্রেরী হয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মধ্যদিয়ে ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ, মহসীন হল দিয়ে ঘুরে ভিসি চত্বর হয়ে কলা ভবন দিয়ে ঘুরে আবার ভিসি চত্বরে এসে অবস্থান নেয়।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে ডাকসু’র এজিএস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন ‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’কে বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের নিয়ে একটি দল ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করতে চাচ্ছে। অধিকার আদায়ের নামে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মৌলিক যে অধিকার, ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সেই অধিকারকে বানচাল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকার জিম্মি করে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেন না। কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনাদের দাদাগিরি আমরা বন্ধ করে দিতে পারি। ছাত্রলীগের সেই সক্ষমতা রয়েছে।’

আন্দোলনের নামে ঐতিহ্যবাহী সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কটু মন্তব্য ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়েছে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানান সাদ্দাম। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আগামীকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে যাওয়ার আহবান জানান তিনি। ক্লাস-পরীক্ষায় কেউ বাঁধা দিলে এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেন সাদ্দাম।

ছাত্রলীগের সাধারন সম্পদক গোলাম রব্বানী ‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’কে বলেন, আমার সিনেটে প্রথম দাবি ছিল সাত কলেজের সমাধান করতে হবে। তখন ভিসি স্যার বলেছেন অনতিবিলম্বে সাত কলেজের সমাধান করা হবে। কিন্তু তা হয়নি। আমাদের একমাত্র আস্থা দেশনেত্রী শেখ হাসিনা। আমরা তাঁর কাছে বলেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার পরিবেশ যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য কাজ করে ছাত্রলীগ।

তিনি আরও বলেন, “আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে আলোচনা করে এর সমাধান করা হবে। ছাত্রলীগ ডাকসুর সাথে বসে এর একটা সমাধান করবে। আপনারা আস্থা রাখুন। আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করব কিন্তু ক্লাস পরীক্ষা চলমান রাখতে চাই। যেখানে আলোচনা করে সমাধান করা যায় সেখানে আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। যদি আগস্টের ১ম সপ্তাহে এর সমাধান না হয় তাহলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আন্দোলন করবে।” 

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি ‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’কে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ চলমান রাখার জন্য আমাদের আজকের প্রোগ্রাম। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাধারন শিক্ষার্থীর অধিকার আদায়ে সবসময় কাজ করেছে। বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা সাত কলেজকে ঢাবির অন্তর্ভুক্ত করার কারন হলো বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আন্ডারে অনেক কলেজ থাকে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্যে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপ্রেক্ষিতে তা করা যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, সাত কলেজ নিয়ে দেশনেত্রী চিন্তা করেন। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর, প্রোভিসির সাথে সাত কলেজ নিয়ে কথা বলেছি। সাত কলেজ কোন বিষয় নয়। আমাদের দাবি শিক্ষার মানোন্নয়ন। আমাদের শিক্ষার মানোন্নয়ন হচ্ছে না। যেহেতু এগুলো আলোচনার মাধ্যমে সামাধান করতে হবে। তাই কালকে থেকে আমরা ক্লাস করব।