বিসিএসে পাস করলেই নিশ্চিত চাকরি!

বিসিএসে পাস করলেই মিলছে চাকরি। হয় ক্যাডারে, নয়তো নন-ক্যাডার। সর্বশেষ ৩৩তম, ৩৪তম, ৩৫তম এবং ৩৬তম থেকে শুধু নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণির পদেই ৪ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।পিএসসি সূত্র বলছে, আগে বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণি পদে নিয়োগের সুযোগ না থাকায় কাউকে নিয়োগের সুপারিশ করতে পারত না বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন। ২০১০ সাল থেকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগে সুপারিশের জন্য বিধিমালা হওয়ার পর থেকে ভাগ্য খুলেছে মেধাবীদের। 

জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, স্বচ্ছতার সাথে পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পিএসসির প্রতি শতভাগ আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। বিসিএস থেকে ক্যাডারের বাইরে নন-ক্যাডার নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হওয়াতেই মেধাবীরাই উপকৃত হচ্ছেন। বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা পরীক্ষার্থীদের জন্য বড় উপহার। শিক্ষার্থীরা সময় অপচয় না করে বিসিএস পরীক্ষায় মনোযোগী হলে চাকরি হবে নিশ্চিত।

পিএসসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৯টি বিসিএস থেকে এ পর্যন্ত সাত হাজার ৪৮০ জনকে নন-ক্যাডার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ২৮তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার নিয়োগের সূচনা হয়।

মূলত ২৭টি ক্যাডারে শূন্য পদে নিয়োগের জন্য প্রতিটি বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি জারি করে পিএসসি। এই বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারীরা তিন ধাপে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রথমে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হন। পরবর্তী সময়ে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে কোনো বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ শুরু হলে পরবর্তী সময়ে বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল দেয়ার আগ পর্যন্ত নিয়োগের সুপারিশ করতে পারে কমিশন।

এক হিসাবে দেখা গেছে, প্রতিটি বিসিএসের সব পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগই ক্যাডার, নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য বিবেচিত হচ্ছেন। ফলে মেধাবীদের হতাশাও অনেকাংশ কেটে গেছে। সরকারি চাকরিতে যে কোনো সময়ের তুলনায় সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিসিএসের জন্য পড়ার টেবিলে।

নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা-২০১০ এর আওতায় ২০১০ সাল থেকে বিসিএস পরীক্ষার সব স্তরে উত্তীর্ণ কিন্তু ক্যাডার পদ স্বল্পতার কারণ ক্যাডার পদে সুপারিশকৃত নন— এমন প্রার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নন-ক্যাডার প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। প্রথম দিকে, শুধু নন-ক্যাডার প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হতো। তবে ২০১৪ সালে বিধিমালা সংশোধন করে নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণির (১০ম, ১১তম ও ১২তম গ্রেড) পদে নিয়োগের সুপারিশের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। ২৮তম বিসিএস থেকে শুধু নন-ক্যাডার প্রথম শ্রেণির সুপারিশ করা হলেও ৩৩তম বিসিএস থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হচ্ছে।

পিএসসির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৮তম বিসিএস থেকে প্রথম শ্রেণির পদে ২৯৮ জন, ২৯তম বিসিএস থেকে ১৯৩ জন, ৩০তম বিসিএস থেকে ৩৬৩ জন, ৩১তম বিসিএস থেকে ১২০ জন, ৩২তম (বিশেষ) বিসিএস থেকে ৬৩ জন, ৩৩তম বিসিএস থেকে প্রথম শ্রেণির পদে ৩৭০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ৫২৩ জন, ৩৪তম বিসিএস থেকে প্রথম শ্রেণির পদে ৪০৯ জন, দ্বিতীয় শ্রেণি পদে ১ হাজার ৮৪৮ জন, ৩৫তম বিসিএস থেকে প্রথম শ্রেণির পদে ৬৯২ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ১ হাজার ৩১৪ জন, ৩৬তম বিসিএস থেকে প্রথম শ্রেণির পদে ২৮২ জন দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ১ হাজার ৫ জন সুপারিশ প্রাপ্ত।

সর্বশেষ ৩৭তম বিসিএসে নন-ক্যাডার নিয়োগ চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির পদে ৬৭৭ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি। দ্রুত সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণির পদে বড় একটি অংশকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে যাচ্ছে কমিশন। এই বিসিএসে নন-ক্যাডার পদে আবেদনকারীর সংখ্যা ২৩৪৫ জন।