আলাদা ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয় চান প্রশাসন ক্যাডাররা

একটি স্বতন্ত্র ব্যাংক গঠন এবং একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করেছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। শুধুমাত্র প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য এ প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি জ্বালানি খরচের সিলিং তুলে দেয়াসহ ঝুঁকিভাতা চালু করার প্রস্তাবও করেছেন প্রশাসনের এই কর্মকর্তারা।

আগামী ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘শাপলা’ হলে পাঁচ দিনব্যাপী এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০১৯’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এসব তথ্য জানান।

 

এরমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত ডিসিদের পাঠানো প্রস্তাবে রয়েছে, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ‘জনপ্রশাসন ব্যাংক’ নামে আলাদা ব্যাংক স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন নোয়াখালীর ডিসি।

তিনি বলেছেন, এতে কর্মকর্তাদের আর্থিক কার‌্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে এবং আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষায়িত এক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন নরসিংদীর ডিসি।

প্রস্তাবে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ‘সিভিল সার্ভিস কলেজ সিঙ্গাপুর’ আদলে গঠন করা যেতে পারে। এতে পাবলিক পলিসি, অর্থনীতি, ফিন্যান্স, সুশাসন, সোশ্যাল পলিসিসহ বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণার সুযোগ থাকবে।

বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর (সেনা, বিজিবি, আনসার, পুলিশ) নিজস্ব ব্যাংক রয়েছে। এ ছাড়া কারও কারও নিজস্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

এর আগে ডিসি সম্মেলন হতো তিন দিনব্যাপী। কিন্তু কার্যপরিধি বেড়ে যাওয়ায় এবার হচ্ছে পাঁচ দিন। সে হিসাবে ডিসি সম্মেলন শেষ হচ্ছে ১৮ জুলাই। এবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রথমবারের মতো প্রধান বিচারপতি, জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে ডিসিদের বৈঠক হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, এবার সম্মেলনে ২৯টি অধিবেশন হবে। এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্যঅধিবেশন ২৪টি। এ ছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, একটি মুক্ত আলোচনা, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সমাপনী অনুষ্ঠান হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন মাঠ প্রশাসনের ৬৪ ডিসি ও আট বিভাগীয় কমিশনার।

ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জেলার ডিসিদের পাঠানো ৩৩৩টি প্রস্তাব উঠছে পাঁচ দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলনে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে আরও উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ডিসিদের অধীন সার্বক্ষণিক একটি বিশেষায়িত পুলিশ ফোর্স গঠন, জেলায় কর্মরত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার এখতিয়ার ডিসিদের প্রদান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ মোবাইল কোর্ট আইনের তফসিলভুক্ত করা, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানদের স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষণ, বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি) এবং বিএড কলেজ বন্ধ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের (পিআইও) এসিআর ইউএনওদের হাতে দেয়া এবং ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার হলে প্যানেল চেয়ারম্যানকে আর্থিক ক্ষমতা দেয়া।

সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মাঠপর্যায়ের নানা প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যার বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর সামনে অনেকটাই খোলামেলাভাবে তুলে ধরবেন। উদ্বোধনের পর বাকি অধিবেশনগুলো সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।