মাকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করে উল্টো হয়রানির শিকার আইনের ছাত্র

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়ারপুর ইউনিয়নে মা ও ভাবীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় উল্টো হয়রানির মুখে পড়েছেন আইনের এক ছাত্র। তাকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া উত্ত্যক্তকারী বখাটেরা উল্টো পুলিশ নিয়ে গিয়ে হয়রানি করছেন বলেও জানিয়েছেন রাজধানী ঢাকার মহানগর ল’ কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র আশিকীন কাহার।

ভূক্তভোগী এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইউনিয়নের আলাইয়ারপুর গ্রামের শেয়ারবাড়ীর তাজুল ইসলামের পুত্র সুমন দীর্ঘদিন ধরে কাহারের বিধবা মাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো। তাদের বাড়ির পাশেই পুকুর হওয়ায় সেখানে মা ও ভাবীরা গোসল করার সময় আপত্তিকর অবস্থান নিত সে। এছাড়া রাতের বেলায় ঢিলও ছুড়তো। তাকে নিষেধ করা সত্ত্বেও সে এটাতে কোন কর্ণপাত করেনি।

সর্বশেষ গত ৮ জুলাই সোমবার স্থানীয় মোশাকপুর মাদ্রাসার সামনে চায়ের দোকানে বসে কাহারের মায়ের নামে বিভিন্ন আজেবাজে কথা বলার অভিযোগ ওঠে সুমনের বিরুদ্ধে। দোকানে বসে থাকা একজন মোবাইলে রেকর্ড করে তা কাহারকে জানায়। ওই রেকর্ডও দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে এসেছে। খবর পেয়ে কাহার দোকানে গিয়ে তার মায়ের নামে আজবাজে কথা বলার কারণ জানতে চাইলে তাজুল বিষয়টি উপস্থিত সকলের সামনে স্বীকার করে এবং বলে, ‘বলছি আরো বলবো’।

তখন কাহার এর প্রতিবাদ করলে উভয়ের মাঝে হাতাহাতি হয়। ঘটনার দুইদিন পর অভিযুক্ত উত্ত্যক্তকারীরা ভূক্তভোগী কাহার ও তার কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পুলিশ নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন। বেগমগঞ্জ থানার এসআই আমেনার নেতৃত্বে ওই পুলিশি হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগে জানা গেছে।

এ বিষয়ে কাহারের প্রতিবেশি এবং মুক্তিযোদ্ধা অজিউল্লার ছেলে সুমন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সুমন দীর্ঘদিন ধরেই পুকুরে কাহারের মা এবং ভাবীরা গোসল করার সময় আপত্তিকর অবস্থান করত। এছাড়া নানা সময়ে আজেবাজে কথাও বলত। রাতের বেলা ঢিল ছোড়ার কথাও শোনা যায়। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কাহার প্রতিবাদ জানালেও কোন সুরাহা হয়নি।’

আশিকীন কাহার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ভাই দেশের বাইরে থাকায় আমি একাই বাড়িতে থাকি। তাদের ওইভাবে অত্যাচারের বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করেছি। ঘটনাটি গ্রামের মুরুব্বিদের সামনে হওয়ায় আমি তাদের নিকট প্রতিকার চেয়েছি। তারা স্থানীয়ভাবে বসে সমাধান করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। এখন সুমন ও তার সঙ্গীরা নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।’ এছাড়া পুলিশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে উত্ত্যক্তকারী সুমনের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন উর রশিদ চৌধুরী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এসআই আমেনা নামে একজন থানায় আছেন। তবে ওই অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নেই। ভূক্তভোগী আমাদেরকে যদি ঘটনার বিষয়ে জানান, তাহলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’