ক্রিকেট মাঠ ঢাকতে কভার কেনার টাকাও নেই ইংল্যান্ডের?

বৃষ্টির কবলে এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ। বাতিল হচ্ছে একের পর এক ম্যাচ। এজন্য রসিকতা অনেকে এবারের বিশ্বকাপকে বর্ষাকাপও বলছেন অনেকে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচও বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। এ নিয়ে চারটি ম্যাচ বাতিল হলো। তিন ম্যাচে বল মাঠেই গড়ায়নি। ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে এর আগে বৃষ্টির কারণে খেলা মাঠে গড়ায়নি এমন ম্যাচসংখ্যা ছিল দুটি, সেখানে এবার এক টুর্নামেন্টেই তিনটি!

এ নিয়ে বিভিন্ন ধরণের প্রশ্ন উঠতেও শুরু করেছে।বৃষ্টি নিয়ে আয়োজকদের প্রস্তুতি নিয়েই এখন যত সমালোচনা।অনেকের মতে, জুনের শেষ দিকে বিশ্বকাপ আয়োজন করলেও বৃষ্টি এতটা বাগড়া দিত না। আইসিসিও জানিয়েছিল, ইংল্যান্ডে জুন ‘তৃতীয় শুষ্কতম মাস’ বলেই শুরুতে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করা হয়েছে।

তারপরও ইংল্যান্ডের আনপ্রেডিক্টেবল আবহাওয়ার যেহেতু নিয়ম-নীতি নেই, সেজন্য বৃষ্টি নিয়ে পূর্ণ প্রস্তুতি রাখা উচিত ছিল। এমন মত বিশ্বকাপের বড় বড় অংশীদার (স্টেকহোল্ডার) প্রতিষ্ঠানের। আয়োজকদের প্রস্তুতির ঘাটতি নিয়ে তারা হতাশা প্রকাশ করার সঙ্গে ক্ষুব্ধও জানিয়েছেন।

মূল প্রশ্নটা উঠেছে মাঠ ঢাকতে পর্যাপ্ত কভার নেই কেন? এ নিয়ে এক স্টেকহোল্ডার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছে, ‘ইংল্যান্ডে পৌঁছে প্রথম কোন কাজটি করেন? রেইনকোট কিনে ফেলা। এটা খুব সাধারণ ও প্রচলিত ভাবনা। তাহলে মাঠের জন্য কেন নয়? ট্রেন্ট ব্রিজে খুব ভালো হোভারক্রাফট আছে। পানিনিষ্কাশনব্যবস্থাও ভালো। তাহলে গোটা মাঠ ঢাকার কাভার নেই কেন?’ ভারত ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর এ মন্তব্য এসেছে।

ট্রেন্ট ব্রিজে গতকাল আউটফিল্ড খেলার উপযোগী থাকলে ওভার কমিয়ে ম্যাচটা খেলতে পারত দুই দল। কিন্তু বাজে আউটফিল্ডের কারণে তা সম্ভব হয়নি।পর্যাপ্ত কাভার না থাকায় আউটফিল্ড খেলার উপযোগী করে তোলা সম্ভব হয়নি।

প্রশ্নও তুলেছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিও।ধারাভাষ্য দিতে ইংল্যান্ডে অবস্থান করা সৌরভ বলেন, ‘ইডেন গার্ডেনসেও মাঠ পুরো ঢেকে ফেলার মতো কাভার আছে। মজার ব্যাপার হলো, আমরা তা ইংল্যান্ড থেকেই কিনেছি। অবাক লাগছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের কেন এসব পর্যাপ্ত নেই।’

গোটা মাঠ ঢাকার গ্রাউন্ড কাভার ভীষণ ব্যয়বহুল বলেই সম্ভবত ব্যবস্থাটি রাখেনি ইসিবি বলে মত অনেকের। সে ক্ষেত্রে ভারতের একটি উদাহরণ দেওয়া যায়। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল ভারত, সেটি শুরু হয়েছিল মার্চে। তখন বর্ষাকাল না হলেও প্রতিটি কাভার ১ কোটি রুপি দিয়ে কিনেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। আর ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) তো টাকারও অভাব নেই।

বিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি অনুরাগ ঠাকুর জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনে ভারত যে পরিমাণ অর্থ পেয়েছিল, এবার বিশ্বকাপ আয়োজনে ইংল্যান্ড তার চেয়ে তিন গুণ বেশি পেয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও ২০১৯ বিশ্বকাপ আয়োজনের কাজ করতে লন্ডনে একটি অফিস ভাড়া করতে চেয়েছিল ইসিবি। সে জন্য বেশি বাজেট চেয়েছিল তারা। মধ্য লন্ডনে কোনো কিছু ভাড়া করা এমনিতেই ব্যয়বহুল। আইসিসি বাজেট পাস করলেও বিসিসিআই তার পক্ষে ছিল না। তিন গুণ বেশি বাজেট পেয়েও কাভারের জন্য কিছু খরচ করতে পারল না?’