ছাত্রদলে কেন এই বিদ্রোহ?

প্রতিকী

অনেক প্যাটার্নের বিদ্রোহ এর আগেও হয়েছে এ সংগঠনকে কেন্দ্র করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যারা বিদ্রোহ করেছেন বহিষ্কার হয়েছিল তারাই পরবর্তীতে পুরস্কৃত হয়েছেন। অর্থাৎ সংগঠনের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা অবস্থান নিয়েছিলেন (গ্রুপিং) তারাই সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন! 

বর্তমান যে বিদ্রোহ সেটা আদর্শিক চেতনা লালনের আরো মানসিক দৃঢ়তা নাকি পদ বঞ্চিত বা ভবিষ্যৎ অন্য দলে জায়গা না হওয়ার হতাশা, এর থেকে নেতৃত্বের প্রতি আস্থাহীনতা? কমিটি গঠন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তাহলে এ নিয়ে কেন কাফনের কাপড় মাথায় নিয়ে বিদ্রোহ, জুতা মিছিল বিদ্রোহ, নেতার বাড়িতে ভাংচুর বিদ্রোহ এমন কি বঞ্চিত নেতার বাসার পরিবারের সদস্যদের হুমকি থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের বিদ্রোহ হয়েছে। 

এর ইতিহাস অনেক লম্বা। সর্বশেষ বিদ্রোহ চলমান অবস্থায় রাত ৪টার (রাজীব-আকরাম) কমিটি ঘোষণা করা হয়। যুক্তি ছিল বিবাহিত বয়স্কদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণদের দিয়ে কমিটি গঠন। এর প্রভাব কি সংগঠন পেয়েছে নাকি আরও অপেক্ষাকৃত তরুণদের জট খুলতে পেরেছে? এখন প্রশ্ন হল ছাত্রনেতারা নিজেরা বয়স বাড়িয়েছে না-কি সংগঠন তাদের বয়স বাড়িয়েছে? আর কমিটির যে মেয়াদ উত্তীর্ণ করল এখন পর্যন্ত ৩টি কমিটি করা যেতো। 

সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়াশোনা পর যদি কেউ চাকুরী ব্যবসা না করে, সংগঠনই জীবন জীবিকা মনে করে সব সময় ব্যয় করে দেয় আর কাংঙ্খিত লক্ষ্যে না পৌঁছাতে পারে তাহলে হতাশায় নিমজ্জিত হওয়াই স্বাভাবিক।  বিগত দুই কমিটির সাবেক ছাত্রনেতাদের এখন পর্যন্ত অন্য কমিটিতে মূল্যায়ন করা হয়নি। যোগ্য নির্বাহী কমিটিতে অনেক অযোগ্যদের ভিড়। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল পাচ সদস্য নির্ভর প্রায় ৩ বছর ধরে। দায়ী কে? 

ছাত্রজীবনই যদি না থাকে তবে ছাত্রদল কিসের? এ প্রশ্ন সাধারণের মনে জাগতেই পারে! শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলিত না হয় তবে ছাত্র সংগঠন কেন? যে সমস্ত বিজ্ঞ সিপাহসালারদের নিয়োগ দেয়া হল (আরো আছেন) তারা শুধুমাত্র ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচন বা আগামী কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ার জন্যে? এতোদিন তারা কোথায় ছিলেন? সংগঠনের দুরবস্থা উনারা এতদিন ধরে দেখছেন না? তাহলে কে চালিয়েছেন? তবে কি প্রশ্ন জাগে না-উনারা যদি সংগঠনে সত্যিকার অর্থে যুক্ত থাকতেন সরকার পতন অনেক আগে হতো।

লেখক: সাবেক সহ-সভাপতি, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ