বাজেট হোক কৃষক-শ্রমিক-শিক্ষার্থীবান্ধব

উন্নত দেশগুলোর বাজেট কেমন? তারা বাজেট ঘোষণার আগে কিভাবে বাজেট বিশ্লেষণ করে? বিশেষজ্ঞদের মতামতকে কিভাবে বাস্তবায়নে নিবেদিত থাকে? কৃষক-শ্রমিক-শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, নারী-শিশু সহ সর্বস্তরের সকলের কথা তারা কিভাবে বাজেট ঘোষণায় গুরুত্ব দেয়? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানে না বাংলাদেশের অধিকাংশ মন্ত্রীই। হয়তো এসব ভেবেই এক কবি লিখেছিলেন— গুণী সাজার নেই প্রয়োজন যদি তুমি হও-হাজার রাজার মুকুট পড়লেও রাজা তুমি নও-রাজা হতে খুব প্রয়োজন নিজের জ্ঞানকে শান দেয়া-প্রজার জীবন সুখি করতে দিবানিশি তান দেয়া-এ তান মানে খাদ্য-চিকিৎসা-বস্ত্র-বাসস্থান ও শিক্ষা-সাথে থাকুক ‘মানুষ’ হওয়ার দীক্ষা...

আমাদের দেশে সর্বশেষ যে বাজেট হয়েছিলো, তা ছিলো উচ্চবিলাসি। সে সময় কাগজে কলামও লিখেছিলাম এ বিষয়ে। এখন অবশ্য সর্বশেষ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি ছয় বছরের সর্বোচ্চে দাঁড়িয়েছে বলে যে তথ্য পেয়েছি, তা আমাকে আবারো লিখতে প্রেরণা দিয়েছে। শুনলে অবাক হবে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশাালী দেশে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিটির বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। অবশ্য করহার কর্তনকে অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু করহার কর্তন করার পর করপোরেট কর সংগ্রহে তীব্র পতন দেখা গেছে। একই সঙ্গে ঘাটতি সংস্থানে দেশটির ক্রমবর্ধমান ঋণের বোঝা আরো ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের ৩ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার রাজস্বের বিপরীতে ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলার। এর ফলে ঘাটতির পরিমাণ ১৭ শতাংশ বা ১১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০১২ সালের পর সর্বোচ্চ। অর্থনীতির অংশ হিসেবেও দেশটির ঘাটতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ৩ দশমিক ৫ শতাংশের তুলনায় সর্বশেষ অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে জিডিপির ৩ দশমিক ৯ শতাংশে। ফলে ঘাটতির হার গত ৪০ বছরের গড় ৩ দশমিক ২ শতাংশের উপরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে এক বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানিউচিন বলেন, প্রেসিডেন্টের অর্থনৈতিক নীতিমালা, যা শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উদ্দীপ্ত করেছে, এর সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কর্তনের প্রস্তাব আমেরিকাকে একটি টেকসই আর্থিক পথের দিকে নিয়ে যাবে। কিন্তু বাজেট প্রতিবেদন অনুসারে, এখন পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রবণতাগুলো অর্থমন্ত্রীর উল্লেখিত পথের বিপরীত দিকই নির্দেশ করছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউজের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের পরিকল্পনাতেও রিপাবলিকানদের দীর্ঘদিনের চাওয়া এক দশকের মধ্যে বাজেটে ভারসাম্য আনার লক্ষ্যও বাদ দেয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে নিকট ভবিষ্যতে ঘাটতির পূর্বাভাস করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বয়স্ক জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর তা চাপ বাড়াবে এবং এতে ঘাটতির ওপরও চাপ তৈরি হবে বলে নিয়মিতই বলে আসছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন হোয়াইট হাউজের বাজেট পরিচালক মাইক মালভানি। তার মতে, কংগ্রেস ব্যয় সংকোচনে ক্রমাগত অনীহা দেখিয়ে আসছে। জুনে সিনেট সংরক্ষণ ও শিশুস্বাস্থ্য কর্মসূচিগুলোয় কয়েকশ কোটি ডলার হ্রাসে হোয়াইট হাউজের পরিকল্পনা বাতিল করে দেয়। অন্যদিকে গত বছর প্রশাসন সামরিক ব্যয় ব্যাপক হারে বাড়িয়েছে। শুধু কি এখানেই শেষ? না, আমি নতুন প্রজন্মের রাজনীতি-শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও অর্থনীতির একজন নগণ্য কর্মী হিসেবে বরাবরের মত বলে রাখতে পারি যে, যতই দিন যাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে তৈরি সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্রের অর্থনীতি ক্রমশ সমস্যাক্রান্ত হবে। যদিও বলা হচ্ছে- আমেরিকার আর্থিক ভারসাম্যহীনতা ভবিষ্যতের জন্য সমস্যা নয়। একই সাথে উল্লেখ করার মত ঘটনা হলো- কমিটির প্রেসিডেন্ট মায়া ম্যাকগিনিজ বলেন, চলতি বছর ঘাটতির পরিমাণ পরিবারপ্রতি ৬ হাজার ২০০ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আমাদের বার্ষিক স্বাস্থ্য বা প্রতিরক্ষা ব্যয়ের চেয়ে বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয়ে বিবৃতি অনুসারে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকারের ব্যয়ের পরিমাণ বেড়েছে ১২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। যার সিংহভাগই ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়া সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার বেড়ে সর্বশেষ অর্থবছরে ১৫ দশমিক ৭৫ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৭৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলার ঘাটতি অর্থায়ন রয়েছে।

এই যখন বিশ্ব অর্থনীতি! তখন আমাদের মত শত চেষ্টায় একটু পা টেনে তোলার মত দেশে সর্বোচ্চ চেষ্টার বাজেট বিড়ম্বনা চলছে। কৃষক-শ্রমিক-শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, নারী-শিশু সহ সর্বস্তরের সকলের কথা বাদ দিয়ে কেবল উন্নয়ন; শতকরা ৩০% ভাগ মানুষের জন্য রাস্তা-ঘাট ব্রীজভিত্তিক উন্নয়নের কাজ নিয়ে এই বাজেট টেলিছবি নির্মিত হচ্ছে। টেলিছবি বললাম একারণে যে, যদি সত্যিকার্থে দেশ-সমাজ-মানববান্ধব কিছু হতো, তাহলে এই সময়ে এসে জানা যেতো না যে, রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের কাটছাঁটের মধ্য দিয়ে চলতি অর্থবছরের (২০১৮-২০১৯) সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর আকার দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা, যা নির্ধারিত ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যয় কমানো হল ২২ হাজার ২৬ কোটি টাকা। ব্যয় করার সক্ষমতার অভাবেই মূলত বাজেটের আকার ছোট করা হয়েছে। এতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রাও কমানো হয়েছে ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ৩০ জুন জাতীয় সংসদে এর অনুমোদন দেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল বৈঠকে চলতি বাজেট সংশোধনের প্রস্তাব আনা হয়। বিস্তারিত পর্যালোচনার পর ওই বৈঠকে এটি চূড়ান্ত করা হয়। মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) অনুপাতে কর রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কমছে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধির গতি না বাড়লে সরকারের ব্যয় আশানুরূপ বাড়ানো যাবে না।

এ বাজেট কৃষক বা শ্রমিকবান্ধব ন হলেও হয়তো হবে বরাবরের মত তাদের মনের মত বাজেট যারা রক্ত চুষে স্বাধীনতার পর থেকে কত টাকার মালিক হয়েছেন নিজেরাই জানেন না। নিত্য নতুন গাড়ি-বাড়ি-নারী পরিবর্তনের কারিগর-রাজাকার-যুদ্ধাপরাধী-দুর্নীতিবাজ-জঙ্গী-সন্ত্রাসী- স্বৈরাচার-মাদক ব্যবসায়ী আর অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মনের মত এই বাজেট তৈরির জন্য কাজ চলছে। বলা হচ্ছে- জাতীয় নির্বাচনের মতো বড় ঘটনার পরও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হার কিছুটা বেড়েছে। বিশেষ করে প্রকল্প পরিচালকদের অর্থছাড়ের আদেশ গ্রহণের মতো বিধান বাতিল করায় অর্থছাড়ের পরিমাণ বেড়েছে। কারণ প্রকল্প পরিচালকরা নিজ ক্ষমতাবলে বরাদ্দের অর্থ ব্যয় করতে পারছেন। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত তা কাটছাঁট করে সংশোধিত রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চূড়ান্ত করা হয় ৩ লাখ ১৬ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটেও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও কমানো হয়েছিল ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

যদিও রাজস্ব আয় প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এনবিআরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রাক?-বাজেট বৈঠকে ঘোষণা দিয়েছিলেন- এবার সরকারের রাজস্ব আদায়কারী এই সংস্থার (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা কমানো হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তার অবস্থানে অটল থাকতে পারলেন না। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস জুলাই-মার্চে রাজস্ব আদায়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি দেখা গেছে। এই সময়ে শুল্ক, কর ও ভ্যাট মিলিয়ে মোট রাজস্ব আদায় করতে পেরেছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশে বাজেট কাটছাঁট এখন ঐতিহ্য হয়ে গেছে। অবশ্য নিয়ম অনুযায়ী বাজেট ঘোষণা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকবারই কাটছাঁট করে ছোট করা হয়। এছাড়া প্রকৃত বাজেট বাস্তবায়নে দেখা গেছে আরও কম হয়। এর কারণ হচ্ছে অতি উচ্চাভিলাষী বাজেট ঘোষণা দিয়ে রাজনীতিবিদরা মনে করেন বড় বাজেট দিতে পারলে বাহবা পাওয়া যাবে। কারণ এই বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে সাধারণ মানুষ মাথা ঘামায় না। তিনি মনে করেন, বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট ঘোষণার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি। চলতি বাজেটে রাজস্ব কর আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৫ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত এ খাত থেকে ১৬ হাজার ২৭০ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। নতুন সংশোধিত রাজস্ব করের লক্ষ্যমাত্রা হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ লাখ ৮০ হাজার ৬০ কোটি টাকা। এরই মধ্যে রাজস্ব আদায়ে গতি বাড়াতে প্রথমবারের মতো এনবিআরের পাঁচজন সদস্যের সমন্বয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি চলতি মে ও আগামী জুনের রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি তদারকি করবে। বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়টি মাথায় রেখে বাজেট প্রণয়ন করা দরকার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রতিবছর বাজেটে শুধু ব্যয়ের উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে আয়কে চাপের মুখে ফেলা হচ্ছে। এভাবে বাংলাদেশকে খাদের কিনারে নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত ছিলো প্রায় সকল সরকারের আমলেই। এসব করে বাজেট প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলাটও যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। সেদিক বিবেচনা করে আয়ের লক্ষ্যমাত্রার সাপেক্ষে ব্যয় নির্ধারণ করা দরকার। তাহলেই বাজেট পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে। অন্যথায় প্রতিবার এ ধরনের কাটছাঁট করায় পুরো প্রক্রিয়ায় একধরনের প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে এবং বাজেট প্রণয়নে দুর্বলতা তৈরি হচ্ছে। বাজেটের ঘাটতি অর্থায়নের আরেকটি বড় উৎস হচ্ছে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ। চলতি বাজেট ঘাটতি পূরণে ব্যাংকিং খাত থেকে ৪২ হাজার ৩০ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে এ খাত থেকে ১১ হাজার ১২২ কোটি টাকা কম নেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ব্যাংকিং খাত থেকে ঘাটতি পূরণে শেষ পর্যন্ত ৩০ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা নেয়া হবে।

অবাক হওয়ার মত বিষয় হলোা- অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৫ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে ব্যাংকিং খাত থেকে যে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি নেয়া হবে না। কারণ সরকার অপর একটি খাত সঞ্চয়পত্র থেকে বেশি ঋণ নিয়েছে। চলতি বাজেটে বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রাও কাটছাঁট করা হয়েছে। ৫৪ হাজার ৭০ কোটি টাকা শুরুতে সহায়তা নেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ খাত থেকে অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪৭ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ বৈদেশিক সহায়তা কাটছাঁট করা হয় ৬ হাজার ৯২২ কোটি টাকা।

সবমিলিয়ে অতীতের বাজেট বলছে- প্রতিশ্রুতি বেশি থাকলে বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যয়ের সক্ষমতা কম থাকায় সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে। এভাবে বাংলাদেশে এলোপাথাড়ি রাজনীতির অভিশাপ হিসেবে বাজেট হবে বিশ্ব নিন্দিত। কেননা, অর্থমন্ত্রী বড় বড় কথা বললেও কাজ করেন ছোট ছোট। তাঁর এই ছোট কাজের বড় প্রমাণও তিনি রেখে গেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী থাককালীন। এখন আবার তিনি অতি সাধু সেজে বলছেন- ‘দুর্নীতি করে কি হবে, এক টুকরা রুটিই তো খাবেন...’

বড় বড় ডায়ালগ নয়; আমরা সাধারণ মানুষ চাই বড় বড় কাজ। চাই এই বাজেট হোক কৃষক-শ্রমিক-শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, নারী-শিশু সহ সর্বস্তরের সকলের মনের মত; অবিরত যেন এগিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ...

মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি
mominmahadi@gmail.com