সিনেমা স্টাইলে ধর্ষণ চেষ্টা, ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার করছিল মেয়েটি!

প্রতীকী ছবি

ঠিক যেন সিনেমা স্টাইলে ধর্ষকের হাত থেকে রক্ষা পেলেন তরুণী। ঘটনা সোমবার রাতের। স্থান নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা নিউটাউনের সামনে রোড। এ রোডেই ঢাকা টু মেঘনায় চলাচলরত স্বদেশ পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে এক কিশোরী যাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছে বাসের চালক। কিশোরীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন বাস থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে এবং চালক শামীমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

আটক শামীম মিয়া সোনারগাঁ উপজেলার নানাখি মধ্যপাড়া গ্রামের আঃ রব ভূইয়ার ছেলে। ওই কিশোরীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ। সে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নে এক ব্যক্তির বাড়ির ভাড়াটিয়া।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা নিউটাউন শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে রাত সাড়ে দশটায় মার্কেটের সামনে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল। এমন সময় ঢাকা টু মেঘনায় চলাচলরত একটি স্বদেশ গাড়ি দেখে থামাতে বললে গাড়িটি আরও দ্রুতবেগে ছুটে যেতেই বাস থেকে এক কিশোরীর বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনতে পায়। কিশোরীর চিৎকার শুনে সবাই দৌড়ে গাড়ির সামনে গিয়ে গতিরোধ করে। গাড়ি থামানোর পর স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা গাড়িতে উঠে দেখতে পায় হেলপার গাড়ি চালাচ্ছে; আর চালক শামীম এক কিশোরী যাত্রীকে ধর্ষণের জন্য বাসের সিটে শুইয়ে রেখেছে। পরে বাস চালককে মারধর করে সোনারগাঁ থানা পুলিশকে খবর দিয়ে তাদের হাতে সোপর্দ করা হয়। এ সময় গাড়ি চালক ও স্বদেশ পরিবহনের বাসটি যার নং- (ঢাকা মেট্টো-ব-১১-৭২৬৫) আটক করে সোনারগাঁ থানায় নিয়ে যায়।

সূত্র আরও জানান, ওই কিশোরী ঈদের ছুটি শেষে সোনারগাঁ মোগড়াপাড়া থেকে মেঘনা যাওয়ার জন্য স্বদেশ পরিবহনের বাসটিতে উঠে। তখন বাসটির চালক মোগড়াপাড়ায় সব যাত্রীকে নামিয়ে দিলেও তাকে মেঘনায় নামিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু বাসের চালক শামীম গাড়ির সিট ঠিক করার কথা বলে হেলপাড়কে গাড়ি চালানোর কথা বলে এবং গাড়ি আস্তে আস্তে চালাতে বলে। একপর্যায়ে গাড়িটি মেঘনা ব্রিজের নিচে নিয়ে ঘুরাতে থাকে আর কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

নিউটাউনের ব্যবসায়ী জসিমউদ্দিন জানান, বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে আমরা বাসের সামনে মানব দেয়াল তৈরি করি। বাসে উঠে ধর্ষণ চেষ্টাকারী চালককে আটক করি। এ সুযোগে হেলপার পালিয়ে যায়। আমরা আনন্দিত যে অন্তত একটি ধর্ষণ রুখতে পেরেছি। এমনও হতে পারতো ধর্ষণ শেষে মেয়েটিকে হত্যা করে ফেলে যেত।

এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানা পুলিশের ওসি মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ধর্ষণের চেষ্টার সময় স্থানীয় জনতা কিশোরীকে রক্ষা করে বাসচালক শামীমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় বাসের চালক ও হেলপারের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় মামলা প্রস্তুতি চলছে।