হত্যার উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগ পরিকল্পিতভাবে হামলা করছে: অভিযোগ নুরের

নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকুস) সহ সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, ‘বগুড়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলা স্বাভাবিক কোনো ঘটনা না। আমাদের মনে হচ্ছে এগুলো পরিকল্পিত একটি ঘটনা। আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে হামলাগুলো করানো হচ্ছে।’ আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

নুরুল হক বলেন, ‘গত ২৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইফতার মাহফিল ছিল। সেখানে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে ইফতার মাহফিল প্রতিহত করা হয় তখন আমরা রাস্তার পাশে বসে ইফতার করেছি। তার পরের দিন বগুড়ায় আমাদের ইফতার মাহফিল ছিল, সেখানে যাওয়ার আগে আমি থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছিলাম। আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম যে নিরাপত্তা নিয়ে আমরা কিছুটা শঙ্কিত, তারা বলেছেন তারা নিরাপত্তা সহযোগিতা করতে পারবেন না।’

তিনি বলেন, এরপর আমরা জেলার অন্যান্য পুরুষের সঙ্গে কথা বললে তারা আমাদেরকে যাওয়ার অনুমতি দেন। অথচ তারা আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। আমরা সেখানে জেলা গ্রন্থাগারের সামনে পৌঁছালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে হামলা হয়। তারা জঙ্গি হামলার মতো আমাদের উপর হামলা করে। এক পর্যায়ে আমি পড়ে গেলে আমার সাথে রাতুলসহ অন্যান্যদের রড দিয়ে পিটায় এবং আমার পায়ের ইট দিয়ে আঘাত করে।’

নুরুল হক বলেন, ‘আমরা জানি ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া একটি ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন। মুসলমানদের সবথেকে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র রমজানে হামলা করে তারা প্রমাণ করছে যে, তারা সাম্প্রদায়িক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে। ছাত্রলীগের কার্যক্রম সাম্প্রতিককালের জঙ্গিদের কার্যক্রমের সাথে সাদৃশ্য মনে হচ্ছে আমাদের। কিছুদিন আগেও তারা বাঙালির ঐতিহ্যবাহী উৎসব পহেলা বৈশাখে অগ্নিসংযোগ করেছে।’

ডাকসু ভিপি বলেন, ‘তারা এই ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের কার্যক্রমের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনাটিও আমরা ছাত্রলীগ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে মুঠোফোনের মাধ্যমে জানিয়েছি, তারা বলেছেন তারা ব্যবস্থা নিবেন। অথচ পরেরদিনও বগুড়াতে কি ধরনের ঘটনা ঘটেছে।’

এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আজকের ছাত্রলীগ নিজেরা মারামারি করে বলে, হালকা ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। তারা হামলা করে করে দায়সারা বক্তব্য দিচ্ছে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর পক্ষ থেকে আমাকে এক নম্বর সহ-সভাপতি অথবা এক নম্বর যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক আমাকে অফার করা হয়েছিল। বিভিন্ন মাধ্যমে তারা সব সময় আমাকে বলেছিলেন। তারা বলেছিল যে ছাত্রলীগের রাজনীতি করলে আমাকে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি তাদের সাথে যায়নি বলে তারা পরিকল্পিতভাবে আমার উপর হামলা চালাচ্ছে। আমি আমার জীবন নিয়ে শংকিত আমি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাই, যারা ছাত্রলীগের নামে যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে তিনি যেন তাদের বিচারের আওতায় আনেন।’

সাংবাদিক সম্মেলনে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।