ছাত্রীকে নগ্ন ছবি পাঠিয়ে বিপাকে শিক্ষক

ছাত্রীকে ফেসবুকে নিজের নগ্ন ছবি পাঠিয়ে বিপাকে পড়েছেন ঝালকাঠি সরকারী হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অভিযুক্ত জীববিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রেজাউল করিম গা ঢাকা দিয়েছেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ মে বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে জীববিজ্ঞানের শিক্ষক রেজাউল করিম নিজের নগ্ন ছবি পাঠান। ঘটনার পর ওই ছাত্রী কয়েকজন শিক্ষকের মেসেঞ্জারে ছবিটি ফরোয়ার্ড করে পাঠায়। এরপর শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ঘটনাটি জানায়। পরে স্কুলের শরীরচর্চা শিক্ষক মাসুম বিল্লাহকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া স্কুল কর্তৃপক্ষ। তিনি তদন্ত করে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পান।

এ ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কাছে শাস্তিমূলক বদলির সুপারিশ করেছে। তবে এই ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ছাত্রী বা অন্য কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

তদন্তের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ওই ছবির সঙ্গে শিক্ষক রেজাউল করিমের বাসার দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয় থেকে বদলির সুপারিশ করেছি পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অপর শিক্ষকরাও রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে সুপারিশ করেছেন। এছাড়া ওই ছবির সঙ্গে কিছু অশ্লীল মেসেজও পাওয়া গেছে। যা তিনি ছাত্রীর ইনবক্সে দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ ও যৌন হয়রানির মৌখিক অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকাকেও তিনি কিছুদিন আগে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে তারা জানান।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল করিম ঘটনা আড়াল করতে তার ফেসবুক আইডি ‘হ্যাক’ হওয়ার কথা জানিয়ে ওইদিনই ঝালকাঠি সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরদিন ১২ মে এ ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ও তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি আবেদন করেন।

এ প্রসঙ্গে ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাইদ মো. ফরিদ বলেন, আমি শিক্ষকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার উপ-পরিচালকের বরাবর অতি দ্রুত শাস্তিমূলক বদলির সুপারিশ করেছি। তিনি আরো বলেন, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অতীতে এ ধরনের আরো অভিযোগ রয়েছে।

অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, আমি বিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও কোন্দলের শিকার। কয়েকজন শিক্ষক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে এ নগ্ন ছবি পাঠানো হয়েছে। তাহলে আপনার বাসার দৃশ্যের সাথে ছবি দৃশ্যের মিল হলো কিভাবে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দেননি।