ছাত্রলীগে পদবঞ্চিত যারা

সম্মেলনের এক বছর পর সোমবার ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন পদবঞ্চিতরা। তারা দাবি করছেন, সংগঠনের গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে ‘বিবাহিত ও অছাত্রদের’ কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এ আপত্তি তুলতে গিয়ে পদ পাওয়া নেতাদের মারধরের শিকারও হয়েছেন তারা।

জানা গেছে, গত কমিটিতে সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন কিন্তু সদ্য ঘোষিত কমিটিতে তাদের স্থান হয়নি, এমন অর্ধশতাধিক নেতা রয়েছেন। তাছাড়া গত প্রায় ৬/৭ বছর ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসছে, এদের অনেকেই বর্তমান কমিটিতে পদ পাননি। সব মিলিয়ে এ সংখ্যা প্রায় দুইশ’র মতো হতে পারে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সোহাগ-জাকির কমিটির যারা সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা বর্তমান কমিটিতে পদ পাননি।  এর মধ্যে রয়েছে-দপ্তর সম্পাদক দেলওয়ার শাহজাদা, কর্মসূচী ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন, প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু, ক্রীড়া সম্পাদক চিন্ময় রায়, পাঠাগার সম্পাদক ইলিয়াস সানী, স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদিন, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুল ইসলাম জুয়েল, আপ্যায়ন সম্পাদক রাশেদ মো. রাশিদুল ইসলাম, উপ প্রচার সম্পাদক সাইফুর রহমান সাইফ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক উপ-সম্পাদক রকিবুল হাসানসহ কেন্দ্রীয় নেতা সুস্ময় দেওয়ান, আহমেদ কাউছার, সৈয়দ আরাফাত, ডাকসুর ক্রীড়া সম্পাদক তানভীর শাকিল প্রমূখ।

এছাড়া হল কমিটির সভাপতি-সম্পাদকরা বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় কমিটির পদে থাকলেও তাদেরকে বর্তমান পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাখা হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ তারা। এদের মধ্যে রয়েছে-জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রহমান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, মাস্টার দ্যা সূর্যসেন হলের সভাপতি গোলাম সরওয়ার, কবি জসীম উদ্দিন হলের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ খান, বিজয় একাত্তর হলের সভাপতি ফকির রাসেল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক নয়ন হাওলাদার, শামসুন নাহার হলের সভাপতি নিপু তন্বী ও সাধারণ সম্পাদক জেসমিন শান্তা, রোকেয়া হলের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবনী দিশা, বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হলের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্রাবনী শায়লা, সুফিয়া কামাল হলের সভাপতি ইফ্ফাত জাহান এশা ও সাধারণ সম্পাদক শারজিয়া শম্পা, শহিদুল্লাহ হলের সভাপতি সাকিব হাসান ও সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসাইন রিফাত, ফজলুল হক হলের সভাপতি শাহরিয়ার সিদ্দিকী সিসিম, একুশে হলের সাধারণ সম্পাদক এহসান পিয়াল।

পদবঞ্চিতরা জানান, যারা গত ৬/৭ বছর ধরে রাজনীতি করে আসছে এদের অনেকেই বর্তমান কমিটিতে পদ পাননি। এদের সংখ্যা প্রায় দুইশ’র মতো। এদের অনেকে অভিযোগ করেন, নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যারা এক বছর রাজনীতি করেছে তারাই কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেয়েছে। কিন্তু যারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে আসছে তারা পদ পাননি।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে ছাত্রলীগ

গত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফুদ্দিন বাবু বলেন, যারা বিগত সময়গুলোতে সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের একটি বৃহৎ অংশকে বাদ কিংবা সঠিক পদে মূল্যায়ন করা হয়নি। যারা নিষ্ক্রিয়, সাবেক চাকরিজীবী, বিবাহিত, অছাত্র, গঠনতন্ত্রের অধিক বয়স্ক, বিভিন্ন মামলার আসামী, মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন অপকর্মের দায়ে যারা ছাত্রলীগ থেকে আজীবন বহিষ্কার হয়েছিল তাদেরকেই ছাত্রলীগে পদায়ন করা হয়েছে। এটা আমাদের ব্যথিত করেছে।