ছাত্রলীগ নেত্রীরা লাঞ্ছিত হওয়ায় আমরা মর্মাহত

ফারুক হাসান

কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমাদের উপর কি বর্বর নির্যাতনই না চালিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমাকে সহ আমার সহযোদ্ধাদের অমানুষের মতো পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছিলেন। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে নুরুল হক নুরকে বিভৎসভাবে আক্রমণ করেছিলেন। সবশেষে আমরা যখন সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক অধিকার আদায়ে কথা বলতে গেলাম সেখানেও আমাদের উপর হামলা চালালেন, সেই সময় শুধু আমাদের উপর হামলা চালিয়েই ক্ষান্ত হননি, আমার বোনদের উপর ইতিহাসের নিকৃষ্টতম জঘন্য হামলা চালালেন।

এতো কিছুর পরও আপনাদের প্রতি রাগ বা ক্ষোভ কোনটাই ছিলো না আমার। আপনারা হয়তো ক্ষুদ্র মানসিকতার দরুণ আমাদেরকে শত্রু ভাবেন কিন্তু আমরা আপনাদেরকে শুধুমাত্র প্রতিযোগীই ভাবি, শত্রু নয়। সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা/প্রতিযোগী থাকবে, কিন্তু প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে ভিন্নমতের বা ভিন্ন দলের মানুষের উপর বর্বর আক্রমণ চালানো সুষ্ঠু রাজনৈতিক শিষ্টাচার হতে পারে না। এটা স্রেফ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।

এখন আসি গতকাল (সোমবার) থেকে চলে আসা ছাত্রলীগের নব গঠিত কমিটির তুলকালাম কর্মকাণ্ড নিয়ে। পেপার পত্রিকার মাধ্যমে দেখলাম ছাত্রলীগের নতুন পদপ্রাপ্ত এবং পদ বঞ্চিতদের মধ্যে মধুর ক্যান্টিনে হাতাহাতি এবং মারামারি। এতে মারাত্মকভাবে আহত হোন পদ বঞ্চিত ছাত্রলীগের কয়েকজন নারী নেত্রী, তারা এখনো হাসপাতালে।

এখন কথা হচ্ছে, এই ঘটনা দেখে স্বভাবতই আমার খুশি হওয়ার কথা বা আনন্দে হাততালি দেওয়ার কথা কিন্তু আমি সত্যি খুশি নয় বরং আমি দুঃখিত এবং মর্মাহত। প্রথম কারণ, যারা আহত হয়েছে তারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোটবোন, বড়বোন কিংবা সহপাঠী। তারা নিজ দলের সহযোদ্ধাদের দ্বারা এভাবে নির্মম নির্যাতনে শিকার হবেন তা কোনভাবেই কাম্য নয়। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।।

এখন আসি আসল কথায়, একটিবার ভাবুন তো রাজনীতিটা আমরা কোন পর্যায়ে নিয়ে গেলে নিজ দলের সহযোদ্ধাদের দ্বারা নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাও আবার পুরুষ কর্তৃক নারী নেত্রীদের উপর হামলা। আর যারা পদ বঞ্চিত তারাই বা কেন পদ না পেয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়ে চলছেন। রহস্যটা এখানেই, কারণ রাজনীতিটাকে যারা পেশা হিসাবে ব্যবহার করেন তারাই পদ পদবীর জন্য খুন পর্যন্ত করতে দ্বিধাবোধ করেন না আজকাল।

অথচ রাজনীতি হচ্ছে একটা সেবার নাম। খেয়ে না খেয়ে গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার নামই রাজনীতি। আপনাদের এই রাজনীতির নামে ধান্দাবাজির কারনে গণ মানুষ আজ বিরক্ত অতিষ্ঠ আপনাদের প্রতি। তারপরও গণমানুষ স্বপ্ন দেখে একটি সুষ্ঠু ধারার সচ্ছ রাজনৈতিক স্রোতের জন্যে। আশাকরি তরুণ প্রজন্ম গণমানুষের সেই আকাঙ্খা পূরণ করতে সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ।

আরো দেখুন: ছাত্রলীগ নেতাদের বিয়ে, চাকরির দালিলিক প্রমাণ প্রকাশ্যে

আরো দেখুন: রাব্বানীর জেলা থেকেই পদ পেল ২২ জন

আরো দেখুন: নিজ ভাইকে বড় পদে বসালেন সভাপতি শোভন

লেখক: যুগ্ম আহবায়ক
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।