বই মানুষের মনের জগতটা খুলে দেয়: শিক্ষামন্ত্রী

বক্তৃতা করছেন শিক্ষামন্ত্রী
বক্তৃতা করছেন শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন মনের জগতকে যদি আমরা প্রসারিত করতে না পারি তাহলে মানব জীবনের অর্থটা সংকীর্ণ হয়ে যায়। আমাদের স্বার্থকতা অনেকখানি কমে যায়। বই পড়া মানুষের মনের জগতটাকে খুলে দেয়।

সোমবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে রাজনীতি, অর্থনীতি শিক্ষা-সংস্কৃতি ও বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ও উপলব্দিকে উপজীব্য করে রচিত ‘আমার দেখা অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ এবং এশিয়া ও ইউরোপের ১৩টি দেশ’ গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের মা অধ্যাপক এডভোকেট কামরুন নাহার বেগম গ্রন্থটির লেখিকা।

একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজ বিজ্ঞানী প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেনের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ সালাম, চুয়েট’র উপার্চার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. শিরিন আক্তার চৌধুরী। অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন গ্রন্থের লেখিকা প্রফেসর এডভোকেট কামরুন নাহার বেগম।

শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, এতো অসীম সম্ভাবনা নিয়ে শ্রষ্টা আমাদের তৈরী করেছেন। আমরা যদি পড়াশোনা ও দেশ ভ্রমন করে পৃথিবী ও সৃষ্টার সৃষ্টি সম্পর্কে ভালো জানতে না পারি সৌন্দর্য ও জ্ঞানকে নিজেদের মধ্যে ধারণ ও চর্চা করতে নাপারি তাহলে শ্রষ্টা আমাদের যেই সম্ভাবনা দিয়ে পাঠালেন সেটাকেই অবমাননা করার সামিল হবে। আমাদের সবারই উচিত জ্ঞানের পরিধিকে বিস্তৃত করা। শ্রষ্টার সৃষ্টিকে জানা। তাঁর এই বিস্ময়কর বিশ্বকে জানা, এবং সেটিকে বুঝবার চেষ্ঠা করা। অধ্যাপক এডভোকেট কামরুন নাহার বেগম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে সেই কাজটিই করেছেন। ভ্রমণের মাধ্যমে লেখক যে আনন্দ উপভোগ ও জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত করেছেন তার সবটুকু তিনি নিজের মধ্যে রেখে দেননি। বই আকারে প্রকাশের মাধ্যমে আমাদের সবার মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন। ভ্রমণকালে ডায়রিতে টুকে নিয়ে সেটাকে বই আকারে প্রকাশ করা অনেক শ্রম সাধ্য কাজ। সে কাজটি তিনি যে করেছেন সেজন্য আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ।

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ডা. দীপু মনি বলেন, আমরা সবাই হয়তো দেশ বিদেশে ভ্রমণ করি। কিন্তু যে দেশটিতে যায় সেটিকে দেখার মধ্যেও ভিন্নতা আছে। এডভোকেট কামরুন নাহার বেগম যেসব দেশ ভ্রমণ করেছেন সেসব দেশের মিউজিয়াম, পার্লামেন্ট, আদালত, রাজনীতি, অর্থনীতি, পরিবহণ, খাবার দাবার সিস্টেম, বিশেষ বিশেষ স্থাপনা সম্পর্কে লিখেছেন। এটা শুধু দেখা নয় তিনি সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার ব্রত পালন করেছেন। একজন নারী হিসেবে লেখিকা যে সময়ে এতো পড়াশোনা করেছেন পেশার জগতে কাজ করেছেন তার বাইরে সামাজিক ও রাজনৈতিকসহ সকল ক্ষেত্রে এতো অবদান রেখেছেন সেটি বিস্ময়কর।

উপস্থিত ছাত্রলীগ যুবলীগ সহ দলীয় নেতাদের প্রতি বই পড়ার অভ্যাস ছেড়ে না দেয়ার আহবান জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি বলেন, এডভোকেট কামরুন নাহার বেগম যখন যেখানে গেছেন ডায়রি লিখেছেন। সবাইকে ডায়রি লেখার অভ্যাস করতে হবে। জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যদি ডায়রি লেখার অভ্যাস না থাকতো তাহলে আজকে আমরা এতো সুন্দর অসামান্য ইতিহাস আমরা পেতামনা। যদি তাজ উদ্দিন আহমেদের মতো নেতারা ডায়রি না লিখতেন তাহলে সেই সময়ের অনেক তথ্য ও ছবি আজ আমরা পেতাম না। তাদের ডায়রি লেখার মাধ্যমে ইতিহাস আমরা ফেরত পেয়েছি। আমরা সবাই সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটছি কিন্তু আমরা লিখছিনা। লেখার অভ্যাসটাই ভুলে যাচ্ছি।

শিক্ষা উপ মন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বর্তমান প্রজন্ম ভ্রমণ কাহিনী পড়েননা। বিশ্ব সম্পর্কে, অন্য দেশের মানুষ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের জানার পরিসীমাটা ক্ষুদ্রতর থেকে ক্ষুদ্র হয়ে আসছে। যার ফলে আমাদের মানসিক সংকীর্ণতা বেড়ে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের মাঝে কিছু জানার ইচ্ছে হলে মোবাইল-কম্পিউটারের মাধ্যমে গুগলে সার্চ করে নিচ্ছি। এধরণের প্রবণতা থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে। সবার মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।