করোনায় মৃত্যু হলে সরকারি চাকরিজীবীদের ঋণ মওকুফ!

  © ফাইল ফটো

গৃহনির্মাণ ঋণ ও গাড়ি কেনার জন্য ঋণ নিয়ে যদি কোনো সরকারি চাকরিজীবী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তবে সেই ঋণ মওকুফের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এ সুবিধা পাবেন না। শুধুমাত্র অসচ্ছল ও নিঃস্ব অবস্থা থাকাকালীন মারা যাওয়া পরিবারকেই শুধু এই সুযোগ দেওয়া হতে পারে। আর এমন উদ্যোগ গ্রহণের চিন্তা-ভাবনা করছে সরকারের গৃহনির্মাণ ঋণ ও গাড়ি ঋণসংক্রান্ত কমিটি। আগামী মঙ্গলবার কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাব তোলা হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন সজীব হোম রায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা অসচ্ছল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারকেই শুধু এই সুবিধা দেওয়া হতে পারে। তবে এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। কমিটির আগামী মঙ্গলবারের বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সাধারণত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ঋণ নিয়ে চাকরিরত অবস্থায় মারা গেলে ওই ঋণের দায় চাপে উত্তরাধিকারীদের ঘাড়ে। তাঁর পারিবারিক পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা থেকে যতটুকু সম্ভব ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে এবার করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষ বিবেচনায় করোনায় মারা যাওয়া অসচ্ছল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঋণ মওকুফের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলেও তাতে সব মিলিয়ে সরকারের এক থেকে দুই কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে ধারণা করছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।

২০১৭ সালে অর্থ মন্ত্রণালয় কম বেতনের চাকুরেদের মৃত্যু হলে তাঁদের ঋণ মাফ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ ব্যাপারে একটি পরিপত্রও জারি করা হয়। তাতে বলা হয়, চাকরিরত অবস্থায় কোনো সরকারি কর্মচারী পরিবার-পরিজন নিঃস্ব অবস্থায় রেখে মৃত্যুবরণ করলে বা অক্ষমতাজনিত কারণে অবসর নিলে তাঁদের অনাদায়ি ঋণের আসল ও সুদ মওকুফযোগ্য হবে। অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) থাকা কর্মচারীদের জন্যও এটি প্রযোজ্য হবে। গৃহ নির্মাণ ও মেরামত, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল কেনার জন্য কর্মচারীদের নেওয়া ঋণ এর আওতাভুক্ত হবে। ওই পরিপত্রে যুগ্ম সচিব থেকে ওপরের পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের ওই সুবিধার বাইরে রাখা হয়।

এবার করোনা উপদ্রুত পরিস্থিতিতে বিশেষ বিবেচনায় কম বেতনের কর্মচারীদের পাশাপাশি অসচ্ছল কর্মকর্তাদেরও এর অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। কারণ এমন কর্মকর্তার সংখ্যা খুব বেশি নয়।

অর্থ বিভাগের সূত্র জানায়, ঋণ মওকুফ পেতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ফরমে এবং মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরের প্রধানদের সুস্পষ্ট সুপারিশসহ নাম-পরিচয়, সর্বশেষ চাকরিস্থল, মৃত্যুর তারিখ, গ্র্যাচুইটি বা পেনশনের পরিমাণ, পেনশন নিষ্পত্তি হয়ে থাকলে সরকারের পক্ষ থেকে কেটে রাখা হয়েছে কি না এসব তথ্য উল্লেখ করতে হতে পারে।

পাশাপাশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সার্টিফিকেট দাখিল করতে হতে পারে। তবে সেই সার্টিফিকেট হতে হবে প্রতিষ্ঠিত ও স্বনামধন্য হাসপাতালের।


সর্বশেষ সংবাদ