রাত ১২টার ফোনে ‘আমি টেকনাফ থানার ওসি’ শোনার পরই কেমন হয়ে যাই

নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খানের মা কেঁদে কেঁদে সন্তান হত্যার বিচার চাইলেন। সোমবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাইলেন তিনি।

সিনহার মা বলেন, কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী ছিল আমার ছেলে। দেশকে নিয়ে অনেক ভাবতো। ছেলে আমাকে বলতো, আম্মি আমরা যদি দেশে ভালো কিছু রেখে যাই, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটা অনুসরণ করবে।

তিনি আরও বলেন, সিনহা সবসময় ক্রিয়েটিভ কাজ করতে চাইত, সবসময় সারপ্রাইজ দিতে চাইত কাজের মাধ্যমে। ও বলতো, আমি আমার মনের খোরাকের জন্য কাজ করি; যাতে মানুষ উপকৃত হয়। একটা ডকুমেন্টরি করছি এখনো বলার মতো কিছু হয়নি, যখন হবে তখন বলব।

তিনি বলেন, ওইদিন সিনহাকে ১১ বার ফোন করেছি, কিন্তু সে রিসিভ করেনি। ফোন ব্যাকও করেনি। রাত ১২টার দিকে একজন ফোন করে বলে, সিনহা আপনার কে হয়? আমি বললাম, ছেলে। তারপর জিজ্ঞাসা করেন, ও কি করে জানেন? বললাম- টুকটাক কাজ করে। ওর ভিডিও বানানোকে আমি টুকটাক কাজ হিসেবেই ধরতাম। তখন আমি কিছুটা রূঢ়ভাবে বললাম, আপনি কেন? তিনি বলেন, আমি টেকনাফ থানার ওসি। এরপরই আমি কেমন হয়ে যাই। বুকের ভেতর কেমন করে ওঠে? আমি তাকে ফোনটা সিনহাকে দিতে বললাম। কিন্তু তিনি না দিয়ে ফোন কেটে দিলেন। এরপর বারবার ফোন করতে থাকি, কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করলেন না। রাত ১টা বেজে গেল। এত রাতে আমি কার কাছে খোঁজ নিব? কাঁদতে থাকতে সিনহার মা।

চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের সৌজন্যে ভিডিওটি দেখুন

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ।

দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া রাশেদ ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। ওই কাজেই তার সঙ্গে ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত ও শিপ্রা।