তখনও জানতেন না, পরদিন ওএসডি হচ্ছেন— আলোচনায় স্ট্যাটাস
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২০, ১০:৪২ AM , আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২০, ১১:০৪ AM
ওএসডি হয়েছেন আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন। যা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঝড় থামছে না। ফেসবুকে ‘ওএসডি হলাম’ লিখে স্ট্যাটাস দেয়ার পর এখন পর্যন্ত ৩২ হাজার অধিক মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখায়। এ সময় ৬ হাজার মন্তব্য ও ৫ হাজার জন শেয়ার করেছেন।
ফেসবুব ব্যবহারকারীরা বলছেন, মাহবুব কবির এমন এক সময়ে ওএসডি হলেন, যখন তিনি যুগ যুগ ধরে চলে আসা রেল ব্যবস্থার বিপুল উন্নয়নে কাজ করছিলেন। একজন বলছেন, ‘আপনার সততা কারো পছন্দ হয়নি। এ কারণেই রেল সিন্ডিকেট, বিকাশ, ইভ্যালি, আমলাতন্ত্র সব এক হয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে'।
এদিকে মাহবুব কবির ওএসডি হওয়ার অনেক বিষয়ের তার আরেকটি স্ট্যাটাস আলোচনায় এসেছে। মাত্র একদিন আগে দেয়া ওই স্ট্যাটাসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন তিনি। অথচ পরদিনই তিনি ওএসডি হলেন। যদি ঘুনাক্ষরেও জানতেন ওএসডি হওয়ার কথা, হয়তো এমন স্ট্যাটাসও দিতেন না। ইতোমধ্যেই স্ট্যাটাসটি শেয়ার করে অনেকেই মাহবুব কবির মিলনে স্বপদে বহালের দাবি তুলেছেন।
বুধবার দেয়া স্ট্যাটাসটিতে মাহবুব কবির লিখেছেন, ছোট বেলার এক বন্ধু (বিকাশ এজেন্ট) ফোন করে ধন্যবাদ জানাল। বলল, ‘‘দোস্ত তুই লেগে ছিলি বলেই কাজটি হয়েছে। বিকাশ মাল্টি ডিভাইস লগইন বন্ধ করে দিয়ে কত মানুষের কত টাকা যে প্রতারকদের হাত থেকে বেঁচে গেল তার হিসেব নেই।’’
আলহামদুলিল্লাহ। অসম্ভব ভাল একটি কাজ হয়েছে বন্ধু। অপার শান্তি পাচ্ছি। ধন্যবাদ বিকাশকে, যে তাঁদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছিলাম। যদিও সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকে লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম বিষয়টি। কাজটি আমার ডিপার্টমেন্টের কাজ ছিল না। ছিল না আমার এখতিয়ারের ভিতরে। সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টকে শুধু সাহায্য করেছি মাত্র। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে সবাইকে সীমানার বাইরে, ডেস্কের বাইরেও কাজ করে যেতে হবে।
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন ইভ্যালির এমডি সাহেব। সেখানেও দেখলাম, শুভেচছা নেয়ার পরিবর্তে অসংখ্য ক্রেতার অভিযোগ আর অভিযোগ। তাঁরা সময়মত পণ্যের ডেলিভারি পাননি। ফলো করে যাচ্ছি ইভ্যালিকে। অনেকবার কথা বলেছি এমডি সাহেবের সাথে। পরামর্শ দিয়েছি। হাজার হাজার মানুষ বিনিয়োগ করে বসে আছে ইভ্যালিতে। সবার ধারণা এটা ২য় ডেসটিনি হতে চলেছে ইভ্যালি।
ইদানিং কিছুটা পজিটিভ পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। আশা করছি, এদেশের মাটি আর মানুষকে যথাযথ সন্মান দেবে ইভ্যালি। আবারও বলছি, ফলো করে যাচ্ছি তাঁদের।
চাকরি থেকে পিএলআর-এ যাবার পর দুইজন সিনিয়র সচিব স্যারকে রাজি করিয়েছিলাম এক সাথে একটি ফোরাম গঠন করে কাজ করার জন্য। তাঁরা সবার অতি পরিচিত, অত্যন্ত সন্মানিত এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্যারদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন। স্যাররা এত ব্যস্ত হয়ে গেলেন যে, স্বপ্নটি আমার পূরণ হল না। স্যারদের বলেছিলাম, আমি সমস্যাগুলো, কল্যাণের কাজগুলো তুলে ধরব, কাজ করে যাব। যখন একা পারব না, তখন শুধু তাঁদের হেল্প নেব। দুইজন স্যারই বলেছিলেন, তুমি আর ভাল কিছু কর্মকর্তা দেখ, যাঁরা এভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
আশায় আছি, ইনশাআল্লাহ একদিন হবে এরকম কিছু। আর এরকমই একটি আদলে স্বপ্নের কথা বলেছিলাম একটি সাক্ষাতকারে। কারো বিকল্প নয়, পাশাপাশি সাহায্য করে অনেক ভাল পরিবর্তন আনা যায় এ সমাজে।
শোকাবহ এ আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং রুহের মাগফিরাত কামনা করে তাঁর স্বপ্ন পূরণে এভাবেই কাজ করে যাবার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। আমরা সফল হবই ইনশাআল্লাহ।
সোচ্চার ছিলেন ইভ্যালি নিয়ে: মাহবুব কবির লিখেন, Evaly.com.bd নিয়ে নিয়ে ব্যাক্তিগত ইন্টারেস্ট নেই আমার। ১০০% বা ১৫০% ক্যাশ ব্যাক অফার কতটা নৈতিক বা অনৈতিক, সে প্রশ্নেও যাব না। মুফতে বা অতি সহজে পাওয়ার আগ্রহ আমাদের কতটা তা আমরা সবাই জানি। ক্যাশ ব্যাক অফার আর ডিসকাউন্ট এর পার্থক্য এখনো আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। ব্যবসা করার অধিকার সবার আছে। তেমনি আছে ইভ্যালির।
ইভ্যালি বা এরকম ব্যবসার ধরণ কতটা যুক্তিযুক্ত বা নীতি বিরোধি তা দেখবে সরকার। ক্রেতার ভোগান্তি বা অধিকার লঙ্ঘন হলে তাঁরা অনায়াসেই অভিযোগ দায়ের করতে পারে। কাজেই ইভ্যালি প্রসঙ্গে আমি ব্যাক্তিগতভাবে পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছি। যদিও সমানে আমাকে ট্যাগ বা ইনবক্স করা হচ্ছে অসংখ্য অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
মজার বিষয় হচ্ছে কোন অভিযোগকারী নিয়মতান্ত্রিকভাবে অভিযোগ দায়ের করছেন না। শুধু কমেন্টে গালাগালি, বিরক্তি বা কটু কথা বলেই খালাস। কারণ, সবাই আশায় থাকেন, যদি এরকম ক্যাশ ব্যাকে পণ্য পেয়ে যাই শেষ পর্যন্ত। বড়ই তাজ্জব বিষয়!
ইভ্যালির স্পেশাল অফারের ৫ নং শর্তে স্পষ্ট বলা আছে পণ্য সরবরাহ করা হবে ৭-৪৫ দিনের মধ্যে। কাজেই ৪৬ দিন হয়ে গেলেই অধিকার লঙ্ঘন হয়ে যায়।
৬ নং শর্তে বলা হয়েছে, পণ্যের স্টক থাকা পর্যন্ত অফার চলবে। এখানেই সবাই ধরা খেয়ে যাচ্ছেন। কেউ জানেন না পণ্যের সংখ্যা আসলে কয়টি। সাইক্লোন অফারে সবাই ছুটছেন সাইক্লোনের মত।
মনে করে নেই, পণ্য আছে মাত্র ৫টি। যেহেতু আমরা জানি না পাঁচটি, কাজেই টাকা জমা দিল হয়ত ১০০ জন। তাহলে দেখা যাচ্ছে পণ্য পাবেন মাত্র পাঁচজন। বাকি ৯৫ জনের টাকা ঝুলে থাকবে দিনের পর দিন।
সো, সবাই জেনেই যাচ্ছেন সেখানে। আপাতত আমাদের করার কিছুই নেই। যেহেতু অনলাইন ব্যবসা বা অনলাইনে এরকম ক্রয়-বিক্রয়ের কোন নীতিমালা বা নিয়ন্ত্রণ নেই সরকারের, তাই যা করবেন, বুঝে শুনেই করবেন। আর ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন হলে আছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
তবে ইভ্যালির পেজে কমেন্ট পড়ে বেশ মজা পাই। মাঝে মাঝে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করে থাকি। যদিও গতকালের করা একটি কমেন্ট ডিলিট করে দিয়েছে ইভ্যালি। আমার কমেন্টের ধাক্কা সামলাতে না পারলে অন্য ধাক্কা সামলানো যে কঠিন। শুভকামনা ইভ্যালি এবং তার ক্রেতাদের।
***এটা সবার বুঝা উচিত যে, বিক্রেতা বা কোম্পানি আপনাকে পণ্যের সাথে ১০০% বা ১৫০% টাকা ফেরত দিচ্ছে, নিশ্চয়ই তিনি পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে বা পকেট থেকে নয়। নিশ্চয়ই অন্যকে ক্ষতিগ্রস্থ করে বা অন্য কোন অনৈতিক উপায়ে।
যেখানেই অনিয়ম, সেখানেই মাহবুব কবির: ‘প্রতারণা- সাহেদ স্টাইল। ক্যাশ ব্যাক অফারের ব্যবচ্ছেদ’ শিরোনামে এক স্ট্যাটাসে লিখেন, পেজের নাম দিয়েছে কুঁড়েঘর। ফার্নিচার অনলাইন শপ। কোন ঠিকানা নেই আছে শুধু মোবাইল নাম্বার। হাজার বিশেক লাইক (জানি না কিভাবে যোগাড় করেছে)। সাথে ৪৫% ক্যাশ ব্যাক অফার।
এরপরের ঘটনা বেশি কিছু জানি না। দুইজন ইনবক্সে জানালেন তাঁরা ঠকেছেন। একজনে পনের হাজার, অন্যজনে ত্রিশ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। এরপর ফোন ধরে না, মোবাইল বন্ধ। পেজ উধাও। এনাদের একজন আবার আজ জানালেন, সম্ভবত নব্য শাহেদ আজ আবার একটি নতুন পেজ খুলেছেন একই প্রকার বক্তব্য, অফার এবং স্ক্রিনশট দিয়ে।
পেজ খুলে দেখলাম, নতুন পেজ। ঠিকানা নেই, নেই কোন মোবাইল নাম্বার। তাদের ওখানে কমেন্ট করলাম, আপনাদের মোবাইল নাম্বার কোথায়। কিছুক্ষণ পর দেখলাম ইনবক্স করেছে, স্যার আপনার কি লাগবে? বললাম, মোবাইল নাম্বার দিন। সে আবার বলল, স্যার আপনার কি লাগবে। মোবাইল নাম্বার লাগবে বললাম।
এরপর দেখি পেজ গায়েব। এবার বুঝেছেন, আপনাদেরকে এরা মানে সাহেদরা কি মনে করে!! কতটা বোকা এবং অধম আমরা! ক্যাশ ব্যাক দেখলেন, আর টাকা পাঠিয়ে দিলেন! আমরা অবিরত ঠকে চলেছি বা ভুল করে যাচ্ছি বলেই সাহেদরা আজ এইদেশে রমরমা ব্যবসা ফাঁদতে পারে।
হতবাক হই, এই রক্তেভেজা স্বাধীন মাটিতে প্রতিনিয়ত জন্ম নিচ্ছে হাজার হাজার সাহেদ কেমন করে! মোবাইল নাম্বার দিয়ে কুঁড়েঘর-আতুরঘরের নাম ঠিকানা ছবি সব বের করেছি। এখন ঠকে যাওয়া দু'জন (হয়ত আরও আছে অনেক) ভোক্তায় অভিযোগ দায়ের করবেন প্রতারকের নাম ঠিকানা দিয়ে। এরপর আমি আছি ইনশাআল্লাহ।
প্লিজ, অনলাইন শপের ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার না থাকলে কোন অবস্থাতেই সেখানে কিছু কিনবেন না। কমেন্ট দেখে বিশ্বাস করবেন না। সেখানে সব পেইড কমেন্ট থাকে।