ভালো মানুষের দাম নেই!

অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলনের ওএসডি নিয়ে তোলপাড় চলেছে। ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও। সবার ভাষ্য,  ঘুণে ধরা রেলওয়েকে কয়েক মাসে যিনি বদলে দিয়েছেন, তাকেই কেন হঠাৎ বদলি?

বৃহস্পতিবার মাহবুব কবির মিলন তার ফেসবুকে ‘ওএসডি হলাম’ লিখে আদেশের কপিটি শেয়ারের পরপরই বিষয়টি নিয়ে ঝড় শুরু হয়। 

শাহাদাত নামে একজন লিখেছেন, ‘যা ভেবেছিলাম তাই হলো। উনাকে চিনি না জানিও না। কিছুদিন আগে একটা স্টেটমেন্ট শুনে ভালো লেগেছিল। কতটা সৎ হলে এবং বুকে সাহস থাকলে একজন অতিরিক্ত সচিব বলতে পারেন ১০ জন সৎ ও চৌকস কর্মকর্তা পেলে তিনি দুর্নীতি নির্মুল করতে পারবেন। তার পুরষ্কার তিনি পেয়ে গেলেন। ওএসডি হিসেবে পদায়ন। উনাকে একটা মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দিলে তো বোঝা যেত, উনার দক্ষতা টুকু।মাননীয়- প্রধানমন্ত্রী আপনি ঠিকই বলেছিলেন। আপনি ছাড়া সবাইকে কেনা যাবে।

সুজন নামে একজন লিখেছেন, এদেশে ভালো কাজ করলেই সোজা বান্দরবান বদলির রেওয়াজ আছে। অল্প কয়েকদিনে রেলের যে লক্করঝক্কর চেহারা পাল্টিয়ে দিয়েছেন তার জন্য আপনাকে মন থেকে ধন্যবাদ। আপনার এইটুকু কাজ আজীবন মনে রাখবে সবাই। ঘুণে ধরা রেলওয়েকে সাম্প্রতিক সময়ে, কয়েকমাসে প্রশংসায় ভাসানো রেলের অতিরিক্ত সচিবকে পুরস্কার হিসেবে ওএসডি করা হলো। ভালো মানুষের দাম নেই!

হয়তো তিনি রেলকে আন্তর্জাতিক মান উপহার দিতে পারতেন। শুভকামনা সিন্ডিকেট সামনে ১৫ হাজার নিয়োগ! যারা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে কালো বিড়াল বলতেন তাদের এ ব্যাপারে আরেকবার ভাবা উচিৎ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও চেষ্টা করেছিলেন রেলকে একটা ভালো অবস্থায় নিয়ে আসতে,কিন্তু কী হলো?

মাত্র ৭০ লাখ টাকার দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগে দেশের ব্রিলিয়ান্ট পার্লামেন্টারিয়ানকে হেস্তনেস্ত করা হলো। আসল কথা হলো রেলের উন্নয়ন করা যাবেনা, রেলকে জনবান্ধব করা যাবে না, এতে অন্য সেক্টরে যাত্রী কমে যাবে, সিন্ডিকেটের পকেট খালি হয়ে যাবে, সাবাশ বাংলাদেশ, সততার পুরস্কার ওএসডি।

ডা. কিবরিয়া খন্দকার লিখেছেন, আমরা কি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারিনা। ফেসবুকের তুমুল শেয়ার করুন আর সবাই প্রতিবাদ করুন এটা অন্যায় এটা অন্যায় দেশের সাথে অন্যায়। আমাদের রেলওয়েকে বাঁচাতে হবে আমাদের দেশকে বাঁচাতে হবে। চলুন সবাই মিলে আমরা আন্দোলন করি। অবশ্যই এটা বাতিল করতে হবে।

প্রিন্স লিখেছেন, ১০ জন অফিসারকে নিয়ে দেশটাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাওয়াটা হচ্ছে অন্যায়। এদেশের ভাল কিছু আর হবে না। ভালো কিছু যা হওয়ার তা সেই '৫২, '৭১ এই হয়েছে। কোনও রকম খেয়ে পরে ৬০/৭০ বছর বেঁচে থাকলেই এই দেশের কাছে থেকে আশা শেষ। এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা বোকামী। ইতালি প্রবাসী সেই ভাইয়ের কথা আজ মনে পড়ছে খুব।

মাহবুব কবির মিলন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে দায়িত্ব পালনকালে বেশ কিছু বহুজাতিক কোম্পানির ভেজাল ও ক্ষতিকর কোম্পানির পণ্য আটকে দেন। তার প্রচেষ্টায় বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ৪৫ কোটি টাকার এমবিএম আটক রয়েছে। সম্প্রতি তিনি কৃষিপণ্যের জন্য আমদানিকারক ৪১টি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিকর পণ্য শনাক্ত করেন। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায় থেকে তার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

মাহমুদ হাসান আরিফ নামে একজনে লিখেছেন, দুষ্টরে লালন করতে হবে আর ভালোরে করতে হবে দমন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন ১০ জন সৎ অফিসার চেয়ে ফেসবুকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, যদি পান তবে ৩ মাসের মধ্যে তাঁর মন্ত্রণালয় দুর্নীতিমুক্ত করতে পারবেন। এর পুরস্কার হিসেবে তাঁকে ওএসডি করা হয়েছে।