করোনায় দিনমজুরি করছেন দুই প্রকৌশলী ছেলে, পূরণ হলো না মায়ের স্বপ্ন

  © সংগৃহীত

স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরেন জয়ন্তী রানী। গ্রামের রাস্তার পাশে ছোট্ট একটি চালা তুলে সিঙ্গাড়া, পিয়াজু বিক্রি করে সংসার চালাতেন। দুই ছেলে অজয় ও দুর্জয়কে লেখাপড়া শেখান। স্বপ্ন দেখেছিলেন দুই ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ে চাকরি পেলে তার কষ্ট দূর হবে।

কিন্তু করোনার এমন পরিস্থিতিতে তার স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুই বেলা খাওয়াই এখন কপালে জুটছে না। তাই বাধ্য হয়ে দুই সন্তান এখন দিনমজুরি করছেন। ঘটনাটি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের।

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে লেখাপড়া শেষ করেছেন অজয়। কিন্তু চাকরি না পেয়ে এতদিন বেকার ছিলেন বাড়িতেই। আর দুর্জয় সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে লেখাপড়া শেষ করে ঢাকায় একটি সিরামিক কারখানায় ইন্টার্নি করছিলেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সেও বাড়িতে চলে আসেন।

এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে জয়ন্তী রানীর ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। দুই সন্তানের খাবার যোগাতে পারছিলেন না তিনি। ত্রাণ হিসেবে ১০ কেজি চাল ও দুটি মিষ্টি কুমড়া পেয়েছিলেন। স্থানীয় একজন সংবাদকর্মীর সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ২ হাজার ৫০০ টাকা পাওয়ার তালিকায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল। কিন্তু জয়ন্তী রানীর মোবাইলে টাকা আসে নাই। কতদিন আর না খেয়ে দিন কাটাবেন। তাই বাধ্য হয়ে দুই সন্তান দিনমজুরির কাজে নামেন।

ছেলে দুর্জয় বলেন, একদিকে মায়ের কষ্ট। অপরদিকে পেটের ক্ষুধা। কতদিন আর না খেয়ে থাকা যায়। লাজলজ্জা না করে মায়ের কষ্ট মোচন ও পেটের ক্ষুধা নিবারণে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছি মজুরির কাজ।

দুই প্রকৌশলী অজয় ও দুর্জয় উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদে শ্রমিকের কাজ করছেন। হ্যান্ড গ্লোবস ও গাম বুট না থাকায় হাত ও পায়ে ক্ষত দেখা দিয়েছে। যাদের গার্মেন্টস ও সিরামিক কারখানায় চাকরি করার কথা আজ তারা দিনমজুরি করে ক্ষুধা নিবারণ করছেন।


সর্বশেষ সংবাদ