২৪ ঘন্টায় ২৪ হাজার টাকা শোধ, হোস্টেল ছেড়ে গ্রামে তাসনিয়া

ঢাকা ছাড়ছেন তাসনিয়া খাতুন
ঢাকা ছাড়ছেন তাসনিয়া খাতুন  © সংগৃহীত

রাজধানীর ফার্মগেটের এম এ মোতালেব ভূঁইয়া (১১৬, গ্রিন রোড, ঢাকা) ভবনের ‘নিবেদিকা’ ছাত্রী হোস্টেলে থাকতেন মোছা. তাসনিয়া খাতুন। স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরির জন্য কোচিং ও পড়াশোনা করছিলেন তিনি। দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রায় গত চার মাস যশোরে গ্রামের বাড়িতে থেকেছেন। করোনা সংকটের সময় বাড়তে থাকায় এবার ঢাকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।

তাই গত ২৬ জুন ঢাকায় এসে দেখেন হোস্টেলে নিজের রুমের দরজায় তার দেয়া তালার বাইরে আরও একটি তালা। হোস্টেলের ইনচার্জ জানান, বাসাভাড়া আগে দিতে হবে, তারপর রুমে প্রবেশ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব ভাড়া পরিশোধ করবেন- তাসনিয়া খাতুনের কাছ থেকে এমন প্রতিশ্রুতি নেয়ার পর তালা খুলে দেন ছাত্রী হোস্টেলের ইনচার্জ।

শুধু তা-ই নয়, তিনবেলা খাবার ও বাসাভাড়া মিলে মোট পাঁচ হাজার টাকা দিতেন তাসনিয়া খাতুন। গত প্রায় চার মাস ছাত্রী হোস্টেলের সবাই গ্রামে থাকায় তাদের ক্যান্টিন বন্ধ ছিল। তারপরও খাওয়া-দাওয়াসহ সাত মাসে তাসনিয়া খাতুনের মোট বিল ধরা হয় ৩৫ হাজার টাকা। পুরো টাকাই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেন হোস্টেল ইনচার্জ। আলোচনার একপর্যায়ে ২৪ হাজার টাকা নিতে রাজি হন ইনচার্জ।

সেই টাকা পরিশোধ করে গত রোববার (২৮ জুন) দুপুরে ছাত্রীনিবাস ছেড়ে বইপত্রসহ যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়ে যশোরের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তাসনিয়া খাতুন।

তাসনিয়া খাতুনের বলেন, চাকরির জন্য কোচিং করতাম এখানে থেকে। করোনার কারণে ১২ মার্চ গ্রামে চলে যাই। গত পরশু ঢাকায় আসি। এসে দেখি আমার রুমে দুটি তালা। এরপর কথা বলতে গেলে হোটেল ইনচার্জ জানান, আগে ভাড়া দিতে হবে, তারপর তালা খুলে দেয়া হবে। এরপর আমার কাছ থেকে মৌখিকভাবে স্টেটমেন্ট নিয়েছে যে, আমি কালকেই টাকা দিয়ে দেব। তারপর আমার রুম খুলে দিয়েছে।’

ভাড়ার বিষয়ে তাসনিয়া খাতুন বলেন, আমাদের থাকা-খাওয়াসহ ভাড়া ছিল পাঁচ হাজার টাকা। জানুয়ারি থেকে জুলাই- এই সাত মাসে ভাড়া ধরেছে ৩৫ হাজার টাকা। যদিও আমি সাত মাস ধরে খাইনি। একপর্যায়ে তারা ২৪ হাজার টাকা নিতে রাজি হয়েছে। তারপরও আমাকে মাসে ৩৫০০ টাকা করে দিতে হয়েছে। কিছু খাবার খরচও।’

বড় ভাই, দুলাভাই এমন কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা ধার করে ভাড়া পরিশোধ করলাম। এ অবস্থায় আর ঢাকা থাকা সম্ভব নয়। তাই গ্রামে চলে যাচ্ছি, বলেন তাসনিয়া খাতুন।


সর্বশেষ সংবাদ