শাপলা চত্বরে অটল থাকাই কি আমার অপরাধ— শফীপুত্রকে কড়া জবাব বাবুনগরীর

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী  © ফাইল ফটো

২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লাম শফী’র নির্দেশ মেনে শাপলা চত্বরে অটল থাকাই কি আমার অপরাধ বলে প্রশ্ন তুলেছেন সংগঠনটির মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আনা জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর পুত্র মাওলানা আনাস মাদানীর একটি ফোনালাপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। বুধবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ সব মন্তব্য করেন।

হেফাজত মহাসচিব বলেন, আমার বিরুদ্ধে ‘জামায়াত সংশ্লিষ্টতা ও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে মানুষকে নিয়ে মার খাইয়েছি’ বলে যে কথা বলেছে, তা সম্পূর্ণ নির্জলা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

তিনি আরও বলেন, আনাস মাদানী জামায়াত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আমার সম্পর্কে যা বলেছেন, সেটি তার মিথ্যাচার। তার এহেন মিথ্যাচার আমাকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ বলেই আমি মনে করি। এগুলো আমার মানহানি করার অপচেষ্টা। কিছু দিন ধরে আমি লক্ষ করছি, তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং সাজানো কথা রটিয়ে উসকানিমূলকভাবে সরকার ও প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চক্রান্ত করে যাচ্ছে। এসবের নিন্দা ও ধিক্কার জানানোর ভাষা আমার নেই।

শফীপুত্র মাওলানা আনাস মাদানী থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশিত নয় জানিয়ে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মাওলানা আনাস মাদানী ফোনালাপে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের মর্মান্তিক ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার আমার ওপর চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করেছেন। তিনি শাপলা চত্বরের মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে আমাকে জড়িয়ে এমন ডাহা মিথ্যা কথা বলতে পারবে, তা আমি আশা করিনি। অথচ জেলে গেলাম আমি, রক্ত দিলাম আমি। রিমান্ডে অমানুষিক নির্যাতন ভোগ করলাম আমি। সেই রাতে হেফাজতের সমাবেশে কী হয়েছিল তা জাতি জানে, কিন্তু মামলার আসামি হলাম আমি।

শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে যা হয়েছিল তা আল্লামা শফীর অবগতিতেই হয়েছে দাবি করে বাবুনগরী বলেন, আমিরে হেফাজতের আনুগত্য করে, লাখ লাখ নবীপ্রেমিক জনতাকে বিপদের মুখে ঠেলে না দিয়ে আমার জীবনের মায়া ত্যাগ করে ঝুঁকি নিয়ে শাপলার মঞ্চে অটল থাকাই কি আমার অপরাধ? আমি আমিরে হেফাজতের নির্দেশ মতে, লালবাগ থেকে শাপলা চত্বরে গিয়েছি এবং আমিরে হেফাজতের পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত শাপলা চত্বরে অবস্থান করেছি। বারবার মিডিয়াকে বলা হয়েছে যে, সেদিন যা হয়েছে আমিরে হেফাজতের নির্দেশেই হয়েছে। সুতরাং এতদিন পর আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়া উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর নামান্তর।

এখনকার সরকারবান্ধব আলেমরাই ২০১৩ সালে জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আঁতাত করেছিল বলে দাবি করেন জুনায়েদ বাবুনগরী।

সংগঠনটির মহাসচিব বলেন, ২০১৩ সালে কারা জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে সুবিধা ভোগ করেছে আর আজ সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে কওমিদের নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে হেফাজতকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে, তা জাতি ভালো করেই জানেন। সময় মতো তাদের মুখোশ উন্মোচিত হবে।