আয়কর কর্মকর্তা ও ছাত্র-জনতার উদ্যোগে ধস থেকে রক্ষা পেল স্কুল

  © টিডিসি ফটো

অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ী দাসিয়ার ছড়ার কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল ধসে যাওয়ার খবর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এর পর তা মেরামত এবং সংস্কার করার উদ্যোগ নেয় দাসিয়ার ছড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ।

মঙ্গলবার (৩০ জুন) দাসিয়ার ছড়া ছাত্রলীগ নেতা জাকির সরকারের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বাধ নির্মানে কাজ করেন স্কুলের শিক্ষক, ছাত্রনেতা হুমায়ুন কবির, মাসুদ রানা, সুমন, লিমন, রিয়াজুল ইসলাম, পল্লব, খাদিমুল ইসলাম, ময়েস চন্দ্র, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্বপন, ফুয়াদ, মিন্টু শেখ, রাকিবুল ইসলাম, আনিসুর রহমান আকাশ, পারভেজ রুবেল, আমিনুল ইসলাম, জুয়েলসহ আরো অনেকে।

সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে বাধ নির্মানের কাজটি খুব দ্রুতই শেষ হয়েছে। পরবর্তীতে দেয়াল যাতে বৃষ্টির পানিতে ক্ষয়ে ধসে না পড়ে সে জন্য বালু ভর্তি শতাধিক বস্তা দিয়ে পাড় তৈরি করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। মেরামত কাজ শেষে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ এরশাদুল হক ও সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম মাঠ পরিদর্শনে যান। এসময় তারা ছাত্রলীগের এই রকম মহতী কাজের প্রশংসা করেন।

বাধ নির্মানকাজের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা আয়কর কর্মকর্তা উপ কর কমিশনার মিজানুর রহমান উল্লাস বলেন, সদিচ্ছা আর ইচ্ছাশক্তি থাকলে সাধারণ মানুষ অর্থাৎ জনগণকে সাথে নিয়ে যেকোন ছোট সমস্যাকে সহজভাবে সমাধান করা যায়। গণমাধ্যমে স্কুল ধসের খবরটি দেখার পর স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম স্কুলের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে বালুমাটি ভরাট করার জন্য জরুরি বরাদ্দ চেয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। যেটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

এছাড়া তিনি বলেন, জুন মাস হওয়ায় এ অর্থবছরে বরাদ্দ পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এর মধ্যে বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে এবং অতিবৃষ্টির কারণে নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে স্কুলটি আরো ক্ষতিগ্রস্ত হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও দাসিয়ারছড়ার সাধারণ মানুষজন বেশ চিন্তিত হয়ে পরে।

তিনি আরো জানান, সরকারি বাজেট বরাদ্দ আসা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকলে স্কুলটি বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে এ আশংকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় মানুষ ও জাকির সরকারের অনুরোধে ব্যক্তি পর্যায়ে স্কুলটি সাময়িকভাবে মেরামত করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবতে থাকলাম।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদুর রহমান এর সাথে কথা বললাম। তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দিলেন। পরে সেখানকার ছাত্রলীগ নেতা জাকির সরকারের সাথে যোগাযোগ করলে তার নেতৃত্বে একঝাঁক স্বেচ্ছাসেবক সমাজকর্মী শিক্ষক ও ছাত্রনেতা-কর্মী মিলে একটানা দু’দিন কাজ করে বালুমাটির বস্তা ও বাঁশ দিয়ে সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি সুন্দরভাবে মেরামত করা হয়।

উল্লেখ্য, ৬৮ বছর পরাধীনতার অন্ধকারে থাকার পর ২০১৫ সালের জুলাইয়ে ছিটমহলবাসীগণ স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়ার তিন মাসের মাথায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সর্ববৃহৎ ছিটমহল দাসিয়ার ছড়ায় যান এবং তাঁরই নির্দেশে অবহেলিত এ জনপদের মানুষের শিক্ষামুক্তির জন্য ২০১৬ সালে তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্হাপিত হয়। এর আগে এখানে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না।


সর্বশেষ সংবাদ