মৃত্যুর দু’‌সপ্তাহ আগে অনাহারে ছিল গর্ভবতী হাতিটি— ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন

  © ফাইল ফটো

ভারতের কেরালা রাজ্যে মারা যাওয়া গর্ভবতী হাতিটির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন বলা হয়েছে— বাজি পুরে রাখা আনারস খেয়ে মুখে বিস্ফোরণের পর থেকে মৃত্যুর দু'‌সপ্তাহ আগে পর্যন্ত সে কিছু খাবার খায়নি; এমনকি পানিও পান করেনি। ক্ষিদে, পিপাসায় নদীর পানির মধ্যেই ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে হাতিটি। আজ শুক্রবার (৫ জুন) ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর এসব ভয়ংকর তথ্য উঠে এসেছে।

মান্নারকড় বন বিভাগের তিরুভাইজামুকুন্ন বিট অফিসে করা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মুখে বিস্ফোরণের জেরে তৈরি হওয়া ক্ষত থেকে স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। তার জেরেই খাবার খেতে পারেনি হাতিটি। আর পেটে থাকা হাতির ভ্রুণটির বয়স হয়েছিল দু’মাস। 

কিছুদিন আগে কেরালার মল্লপ্পুরমে খাবারের খোঁজে হাতিটি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে এসেছিল। সেই সময় স্থানীয় বাসিন্দারা আনারস খেতে দিয়েছিল তাকে। কিন্তু সেই আনারসের মধ্যে ভর্তি করা ছিল পটকা-বাজি। সেই আনারস খেতেই মুখে ফেটে যায় বাজি ভর্তি আনারস। তার পর সেখান থেকে হাতিটি চলে যায় ভেলিয়ার নদীর ধারে। প্রায় দু’সপ্তাহ শুঁড় ডুবিয়ে পানিতে দাঁড়িয়ে ছিল। গত ২৭ মে সেখানেই মৃত্যু হয় হাতিটির। 

মৃত্যুর তাৎক্ষণিক কারণ হিসেবে তখন বলা হয়েছিল, পানির ডোবার কারণে অতিরিক্ত পানি খেয়ে ফেলেছিল হাতিটি। তার জেরে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৫ বছরের হাতিটির। কিন্তু ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাজি ফাটার ফলে তৈরি হওয়া মুখের ক্ষত থেকে স্থানীয় সংক্রমণ হয়েছিল। সেই কারণে মুখসহ সর্বত্র অসহনীয় ব্যথা হয়েছিল। আর তার জেরে প্রায় দু’সপ্তাহ খাবার ও পানি কিছুই খেতে পারেনি হাতিটি। প্রচণ্ড দুর্বলতা থেকে শেষ পর্যন্ত নুইয়ে পড়ে এবং পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়।

হাতিটির মুখে বা শরীরে গুলি বা ধাতব কোনও বস্তুর আঘাতের চিহ্ন মেলেনি বলে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে। বাইরে থেকে কোনও কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল, মেলেনি তেমন প্রমাণও। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুখের মধ্যে নানা ধরনের টিসু ও প্রচুর পোকার লার্ভা। চিকিৎসকরা মনে করছেন, ঘা থেকে যে সংক্রমণ হয়েছিল, সেখানেই লার্ভা তৈরি হয়েছিল। এছাড়া নীচের চোয়াল অত্যন্ত ফুলে যাওয়া চোয়াল ছাড়া আর কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই।


সর্বশেষ সংবাদ