ক্যাসিনো-কাণ্ড: লোকমান ও শফিকুল জামিনে বের হলেন

ক্যাসিনোবিরোধী ও শুদ্ধি অভিযানে আওয়ামী যুবলীগের নেতা, ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ গ্রেপ্তার হওয়া ১২ জনের মধ্যে দুজন কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে গেছেন। তাঁরা হলেন মোহামেডান ক্লাবের পরিচালক (ডাইরেক্টর ইনচার্জ) লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ও কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের সভাপতি ও কৃষক লীগের নেতা শফিকুল আলম (ফিরোজ)। বাকি ১০ জন এখন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ বিভিন্ন কারাগারে আছেন।

এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া ছয় মাসের সাজা শেষ করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। রমনা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মামলায় তিনি কারাগারে আছেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. মাহাবুবুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দুই আসামির জামিনে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, সব তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৯ মার্চ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া কাশিমপুর-১ থেকে ও ১ জানুয়ারি শফিকুল আলম ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে তেজগাঁওয়ের মণিপুরীপাড়ার বাসা থেকে লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর রাতে শফিকুল আলমকে কলাবাগান ক্রীড়া চক্র থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাঁর বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করা হয়। সম্প্রতি ওই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। শফিকুল আলমের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা করে র‍্যাব।

ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চলা ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি সম্রাটসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গ্রেপ্তারের পর সম্রাটকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

একটি মামলায় সম্রাটের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে। বিভিন্ন কারাগারে আছেন ১০ জন। তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।

গত ৬ অক্টোবর ঢাকা মহানগর যুবলীগের ক্যাসিনোর হোতা সম্রাট ও তাঁর সংগঠনের সহসভাপতি এনামুল হককে (আরমান) কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন সম্রাট ও তাঁর সহযোগী আরমানকে ঢাকায় এনে তাঁদের নিয়ে কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে সম্রাটের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে অবৈধ পিস্তল-গুলি, মাদক ও বন্য প্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়।

ওই দিন রাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। সম্রাট ও তাঁর সহযোগী আরমানের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি সম্রাটের ছয় মাসের সাজা শেষ হয়েছে। এখন তিনি রমনা থানায় করা মামলায় এই কারাগারে আছেন।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র‍্যাব। এদিন ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে চারটি ক্লাব সিল করে দেওয়া হয়। ইয়ংমেনস ক্লাবের ক্যাসিনোর মালিক ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। ওই দিন রাতে তাঁকে গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কারা সূত্র জানায়, ক্যাসিনো-কাণ্ডে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা খালেদ, সেলিম প্রধান, কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব ও হাবিবুর রহমান মিজান কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে আছেন। ঠিকাদার ও যুবলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীম (জি কে শামীম) কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন। যুবলীগ নেতা আরমান, কাউন্সিলর ময়নুল হক (মনজু), আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল ভূঁইয়া ও রূপন ভূঁইয়া বিভিন্ন কারাগারে আছেন। (সূত্র: প্রথম আলো)


সর্বশেষ সংবাদ