দুদক পরিচালক বাবাকে হারিয়ে দেশবাসীর প্রতি আকুতি জানালেন ছেলে

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকালে মারা গেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একজন পরিচালক। বাবার মৃত্যুর পর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একমাত্র সন্তান ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে দেশবাসীর প্রতি আকুতি জানিয়ে সবাইকে ঘরে থাকতে অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া সেলফ আইসোলেশনে থাকার কারণে বাবার জানাজা ও দাফনে অংশ নিতে পারেননি একমাত্র ছেলে।

দুদক পরিচালক পরিচালকের ছেলের স্ট্যাটাসটি এখানে তুলে ধরা হলো :

আমার বাবা আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কার্ডিয়াক এরেস্টের কারণে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি...রাজিউন)। উনি গত ৩০ মার্চ করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তবে দুঃখের বিষয় এই যে, উনার মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে লেখা প্রতিবেদনেও অনেক ভুল-ভ্রান্তি চোখে পড়ে। সে ভুল-ভ্রান্তিগুলো আমি একটু তুলে ধরতে চাই :

১। আমি উনার একমাত্র সন্তান ছিলাম, আমার কোনো ভাইবোন নেই।

২। আমি এবং আমার আম্মু দুজনই পরিপূর্ণ রূপে সুস্থ আছি।

৩। আমরা গত সাত দিন ধরে দুজনই সেলফ আইসোলেশনে আছি, কোন হাসপাতালে না। আমাদের দুজনকে আরও সাত দিন সেলফ আইসোলেশনে থাকতে হবে। (সেলফ আইসোলেশন বলতে ঘরের মধ্যে নিজেকে আলাদা করে রাখা, কার সাথে দেখা সাক্ষাৎ কিংবা মেলামেশা না করা)।

সেলফ আইসোলেশনের কারণে না বাবার জানাজার অংশ হতে পেরেছি, না উনাকে কবর দেওয়ার অংশ হতে পেরেছি। এর চেয়ে কঠিন কিছু আর নেই। উনাকে আজ ৪টার দিকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। উনি একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষ ছিলেন। উনার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

আমার বাবা জীবিকার তাগিদে সরকারি আদেশ না আসা পর্যন্ত ২২ মার্চ পর্যন্ত অফিস করেছিলেন। তারপর থেকে তিনি বাসাতেই ছিলেন। কিন্তু তবুও রক্ষা পাননি। তাই এখনো যারা ঘরে থাকার বিধিনিষেধ মানছেন না, তাদের সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই না, বর্তমানে এই মুহূর্তে আমার এবং আমার পরিবারের ওপর দিয়ে যা যাচ্ছে, সেটা আমার শত্রুকেও মোকাবিলা করতে হোক।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওই পরিচালক সোমবার সকালে মারা গেছেন। দুদকের ওই পরিচালক রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মারা যাওয়া দুদক পরিচালক প্রশাসন ক্যাডারের ২২তম ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন। প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ