করোনাভাইরাস: অস্ট্রেলিয়ায় বিপদে ৬ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী

  © সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ঘোষণা দিয়েছেন, করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগময় সময়ে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ছাড়া আর কারো দায়িত্ব নেবে না সরকার। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমাদের নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্যই এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।

গতকাল কেবিনেট সভায় আলোচনার পর তিনি আরও বলেছেন, জন্ম যে দেশেই হোক না কেন, তিনি যদি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হন তাহলে তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। যারা অস্থায়ী ভিসা নিয়ে এদেশে অবস্থান করছেন, তাদের দ্রুত নিজেদের দেশে ফিরে যেতে হবে। খবর অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (এবিসি)।

বর্তমানে প্রায় ৬ হাজার বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী অস্থায়ী ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পড়ালেখা করছেন। হঠাৎ করে অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই সিদ্ধান্তে অনিশ্চয়তায় পড়েছে এসব বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।

এবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে প্রায় প্রায় পাঁচ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী এবং বিশ লাখ ‘হলিডে ওয়ার্কার’ অস্থায়ী ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এদের সবাইকেই অস্ট্রেলিয়া ত্যাগ করতে হবে।

তবে এদের মধ্যে কয়েকটি সেক্টরের বিষয়ে বিশেষ বিবেচনার কথা বলা হয়েছে। যে সব বিদেশি ছাত্রী নার্সিং বিষয়ে পড়ছেন তাদেরকে অস্ট্রেলিয়া না ছাড়তে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ কোভিড-১৯ এর জন্য সরকার ইতোমধ্যেই দেশের সব প্রাইভেট হাসপাতাল এবং বেশ কয়েকটি পাঁচতারকা হোটেল দ্রুত চিকিৎসা সুবিধার জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিয়ে এসেছে। সেখানে প্রচুর নতুন চিকিৎসক ও নার্স প্রয়োজন।

অন্যদিকে, যারা হলিডে ওয়ার্কিং ভিসায় কেবল ফল ও সবজি বাগানে কাজ করেন তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ দিয়েছে সরকার l

অস্ট্রেলিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মাসিকর্মাক বলেছেন, আমাদের এই মুহূর্তে প্রচুর ফল ও সবজি প্রয়োজন, তাই এখন আমরা কোনোভাবেই এটা মেনে নিতে পারবো না যে, গাছে ফল পেকে ঝরে যাচ্ছে, না তোলার কারণে সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘দ্য কাউন্সিল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অস্ট্রেলিয়া’। সংগঠনটি বলছে, অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর বিরাট ভূমিকা আছে। একজন ছাত্র গড়ে ৪০ হাজার ডলার টিউশন ফি দিয়ে থাকেন। প্রতি বছর ছাত্রদের কাছ থেকে সরকার ৩২ বিলিয়ন ডলার উপার্জন করে।

তারা আরও বলছে, প্রধানমন্ত্রী বর্ণবাদী বক্তব্য রেখেছেন এবং তিনি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের তাচ্ছিল্য করে কথা বলেছেন। এখন অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ লকডাউন। এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই ঘোষণা রীতিমত অমানবিক।


সর্বশেষ সংবাদ