করোনায় মৃত্যু: শতকরায় ইতালির পরেই বাংলাদেশ

  © সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। দিনকে দিন এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ওয়ার্ল্ড ও মিটারের তথ্যমতে এই রোগে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ২৭ হাজার ৪৪১ জন। যা মোট আক্রান্তের শতকরা ৪.৫৬ শতাংশ।

তবে বাংলাদেশে শতকরা মৃত্যুর হার ১০.৪১ শতাংশ। যা করোনায় আক্রান্ত দেশগুলোর শতকরা হিসাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে এই হার কমে আসবে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথমবারের তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়। সেই সংখ্যা এখন ৪৮ এ পৌঁছেছে। মারা গেছে পাঁচজন। শতকরা হিসাবে যা ১০.৪১ শতাংশ।

দেশে মৃত্যুর হার বেশি হলেও সুস্থ হওয়ার হারও অনেক বেশি। আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআর এর পরিচালক সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। মোট আক্রান্তের যা এক তৃতীয়াংশের কাছাকাছি। সুস্থ হওয়াদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারী। এর মধ্যে ২ বছরের শিশু থেকে রয়েছেন ৫৯ বছর বয়সী ব্যক্তিও। তাদের অধিকাংশদের মধ্যে সর্দি, কাঁশিসহ মৃদু রোগ উপসর্গ ছিল। শুক্রবার পর্যন্ত আইইডিসিআর এক হাজার ২৬ জনের করোনা টেস্ট সম্পন্ন করে। যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করা হয় ১০৬টি টেস্ট।

ওয়ার্ল্ড ও মিটারের সবশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, করোনায় বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। দেশটিতে হু হু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৯১৯ জন করোনায় মারা গেছে। এ নিয়ে ইতালিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ১৩৪ জনে। যা মোট আক্রান্তের শতকরা ১০.৫৫ শতাংশ। মৃত্যুর হারে এটিই সর্বোচ্চ। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮৬ হাজার ৪৯৮ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ হাজার ৯৫০ জন।

এর পরের অবস্থানে রয়েছে সান ম্যারিনো। দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ২২৩ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। শতকরা হিসেবে যা ৯.৪১ শতাংশ। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬ জন।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন অবদি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৪ হাজার ২৫৬ জন। এদের মধ্যে মারা গেছে এক হাজার ৭০৪ জন। শতকরা হিসেবে যা ১.৬ শতাংশ। এছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৫২৫ জন।

করোানয় সবচেয়ে বেশি মৃতের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ফুটবলের দেশ স্পেন। স্পেনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৫ হাজার ১৩৮ জন। শতকরা হিসেব করলে যা দাঁড়ায় ৭.৮১ শতাংশ। দেশটি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৬৫ হাজার ৭১৯ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ হাজার ৩৫৭ জন।

করোনার উৎপত্তিস্থল চীনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার হার এবং মৃত্যুর হার দুটোই অনেক কমেছে। ইতোমধ্যে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লকডাউন তুলে নেওয়া হয়েছে। দেশটিতে ৮১ হাজার ৩৯৪ জন আক্রান্তের মধ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৩ হাজার ২৬৫ জন। শতকরায় যা ৪.০১ শতাংশ। এছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৪ হাজার ৯৭১ জন।

উল্লেখ্য গত বছর চীনের উহান প্রদেশ থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পরে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে বিশ্রে ১৯৯টি দেশের ৬ লাখ ১ হাজার ৫২০ জন আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪৫৪ জন।


সর্বশেষ সংবাদ