ব্লগার অভিজিৎ রায়কে স্মরণ

  © টিডিসি ফটো

৫ বছর আগে এইদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইটের সামনে ঘাতকের চাপাতির আঘাতে নিস্তেজ হয়ে যান বিজ্ঞান লেখক, ব্লগার অভিজিৎ রায়। তার মৃত্যুর দিনটিতে ওই স্থানে ফুল, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন আর নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হয়।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ব্লগার অভিজিৎ রায়কে তার সহযোদ্ধারা স্মরণ করেন। এসময় তারা এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অবিলম্বে বিচারেরও দাবি জানান তারা। এসময় অভিজিৎ স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর আগে সেখানে ফুল আর মোমবাতি দিয়ে লেখা হয় ‘অভিজিৎ হত্যার বিচার চাই’।

অভিজিৎকে স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার, অভিজিৎ রায়ের ছোট ভাই অনুজিৎ রায়, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক জীবনানন্দ জয়ন্ত, আকরামুল হক, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অণিক রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয়, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসু, অ্যাক্টিভিস্ট বাকী বিল্লাহ প্রমুখ।

এসময় ডা. ইমরান এইচ সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অভিজিৎ রায়কে পাঁচ বছর আগে ঠিক এই জায়গায় নিমর্মভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এইদিনকে যদি দিবস বলতে হয়, তাহলে হত্যা দিবসই বলতে হবে। কারণ তারতো কোনও মৃত্যু হয়নি। তাকে হত্যা করা হয়েছিল। আজ পাঁচ বছর হয়ে গেল এখন পর্যন্ত তার হত্যার বিচার করা হয়নি। তার বাবা অজয় রায় ছেলের হত্যার বিচার দেখে যেতে পারেননি। আমরা জানি না যে ক দিন তার বিচারের দাবিতে আমাদের এভাবে দাঁড়াতে হবে।

অভিজিৎ রায়ের ছোট ভাই অনুজিৎ রায় বলেন, আসলে ভাই হারানোর বেদনা যে পায়নি, তাকে বলে বোঝানো যাবে না। দু:খজনক ঘটনা হলো আমি ভাই হারিয়েছি, মা হারিয়েছি এবং কিছুদিন আগে বাবাকেও হারালাম। প্রতিবছর এই সময়তে সাংবাদিকসহ অনেকে ফোন করে একই প্রশ্ন করে। তাদের একই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে আমিও যেন বিরক্তির মধ্যে রয়েছি। এতোদিন পরও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। বিচার অতি দ্রুত হলে একটু শান্তি পাবো। তবে, আপনারা যেন অভিজিৎ রায়কে ভুলে না যান। তার আদর্শের মাধ্যমে তাকে স্মরণ রাখবেন, আপনাদের প্রতি এটাই প্রত্যাশা থাকবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা থেকে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে নিয়ে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ব্লগার অভিজিৎ রায়কে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বন্যাও গুরুতর আহত হন। পরে অভিজিত রায়ের বাবা অজয় রায় বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও পরে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) তদন্ত করে। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল আদালতে অভিযোগ পত্র দেয় সিটিটিস।