অস্ট্রেলিয়া থাকতে অযোগ্য বাংলাদেশি শিশুটি!

আদিয়ান
আদিয়ান  © সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়া ছাড়তে হতে পারে বাংলাদেশি এক পরিবারকে। তাদের ছয় বছরের শিশু আদিয়ানের ‘কিছুটা প্রতিবন্ধিতা’ আছে। আর তাতেই অস্ট্রেলিয়ার কঠোর অভিবাসন নীতিমালার বেড়াজালে আটকে পড়েছে। শিশুটিকে তার মা-বাবার সঙ্গে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতে চাইছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার। ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের মাত্র ছয় বছরের শিশুটি হালকামাত্রায় শরীরিক প্রতিবন্ধী; সে কারণে তাদের সঙ্গে এ ধরনের ‘অবিচার’ করা হচ্ছে। গত নভেম্বরে দ্য গার্ডিয়ান অনলাইনেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশি মেহেদি হাসান ভুঁইয়া ও রেবেকা সুলতানা দম্পতির ছেলে আদিয়ান। আদিয়ানের জন্ম অস্ট্রেলিয়াতেই। মেহেদি হাসান শিক্ষার্থী ভিসায় ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়া যান। পরের বছর বাংলাদেশে তাঁর আর রেবেকার বিয়ে হয়। ২০১৩ সালে রেবেকা অস্ট্রেলিয়ায় যান। একই বছরের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ায় জিলং হাসপাতালে আদিয়ানের জন্ম হয়।

জন্মের কয়েক মাস পর মা-বাবা খেয়াল করেন, নিজে থেকে মাথা তুলতে আদিয়ানের কষ্ট হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে, আদিয়ানের হালকা সেরিব্রাল পালসি (মস্তিষ্কে পক্ষাঘাত) আছে। জন্মের আগে আগে বা পরে স্ট্রোক থেকে তার এই সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।

মেহেদি হাসান বাংলাদেশ থেকে ডিগ্রি নেন। পরে দক্ষিণ কোরিয়ায় মাস্টার্স করেন। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার ডেয়াকিন ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি প্রকৌশলবিদ্যায় পিএইচডি করেন। মেহেদি হাসানের স্থায়ী দক্ষ অভিবাসী ভিসার আবেদন মনোনয়ন দেয় ভিক্টোরিয়া রাজ্য সরকার। কিন্তু আদিয়ানের কিছুটা প্রতিবন্ধিতার কারণে অস্ট্রেলিয়ার কঠোর অভিবাসন নীতির আওতায় ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।

ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে পরে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে পরিবারটি। ট্রাইব্যুনাল আড়াই বছর পর ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।

বাবা-মায়ের সঙ্গে আদিয়ান

 

এদিকে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই পরিবারকে সে দেশে না রাখার বিষয়ে রুল জারি করেছে। সেই সঙ্গে আরো বলা হয়েছে, ছেলেটিকে নিয়মিত থ্যারাপি দিতে হবে, সে কারণে তাকে দেশের বোঝা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেও কোনো লাভ হয়নি। আপিল ট্রাইব্যুনাল বলছে, শিশুর ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে অন্য কোনো মত তারা দিতে পারে না।

ওই পরিবারটি এখন সে দেশের অভিবাসনমন্ত্রী ডেভিড কোলম্যানের দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি চাইলে পরিবারটি বিতাড়নের কবল থেকে বাঁচতে পারে। অন্যথায় মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে সব গুছিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসতে হবে তাদের।


সর্বশেষ সংবাদ