৫০ টাকার দিনমজুর ঢামেক শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ালেন এসপি

  © সংগৃহীত

নাম তার রাজকুমার। চেহারাও রাজকুমারের মতই। ছিলেন অসম্ভব মেধাবী। ঢাকা বোর্ড থেকে বিজ্ঞান বিভাগে সম্মিলিত মেধাতালিকায় পেয়েছিলেন উচ্চতম স্থান। যথারীতি সুযোগ পেয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। ঢাকা মেডিকেলের সাবেক মেধাবি শিক্ষার্থী মানসিক প্রতিবন্ধী রাজ কুমার শীলের পাশে দাঁড়ালেন দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিপিএম, পিপিএম (বার)।

আজ শনিবার বিকেলে বিরামপুর পৌর শহরের ঘাটপাড় এলাকায় রাজ কুমার শীলের বাসায় যান তিনি। এ সময় অসুস্থ রাজ কুমার শীলকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন তিনি। পরে রাজ কুমার শীলের চিকিৎসার জন্য নিজ তহবিল থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদন করেন। একই সঙ্গে তিনি প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা করার ঘোষণা দেন। এছাড়াও রাজ কুমার শীলের বাড়িটি সংস্কারসহ বাড়ির পাশে দুটি দোকান ঘর করে দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

জেলা পুলিশ সুপার বলেন, আমাদের সমাজে নারীরা বেশি হয়রানির শিকার হন। তখন ওই সকল নারী ও শিশুদের সঙ্গে স্বীকারোক্তিমূলক কথা বলতে হলে অন্যের দারস্থ হতে হয়। সে ক্ষেত্রে এই সহায়তা কেন্দ্র আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে।

তিনি বলেন, একজন অসহায় নারী ধর্ষণের শিকার হলে তারা পুরুষ মানুষের কাছে কথা বলতে লজ্জাবোধ করে। তাই তাদের সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য আমাদের একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা ওই সহায়তা কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করবেন।

ঢামেক ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করলেও দ্বিতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষায় ফার্মাকোলজিতে অকৃতকার্য হওয়ার পর দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও ভালো রেজাল্ট করতে না পেরে গুরুতর মানসিক অসুস্থতায় (সিজোফ্রেনিয়া) পড়ে যায়। ৭০ বছর বয়সী মা পার্বতী রানী শীলের সঙ্গে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য নিজের শিক্ষাজীবনের সার্টিফিকেটগুলো সত্যায়িত করতে যান ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালীর কাছে। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার আরও এক প্রতিবন্ধী ভাই আনন্দ কুমার শীল।

বর্তমানে ৩০-৫০ টাকা মজুরিতে বাড়ির পাশে সেলিম সরকারের ভূষির কারখানায় দিনমজুরের কাজ করছেন রাজ কুমার শীল। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসন তাদেরকে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। চিকিৎসক তাদেরকে পরীক্ষা নীরিক্ষা করে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

এর আগে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিরামপুর থানায় নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের আলাদাভাবে সহায়তার জন্য ‘সহায়তা কেন্দ্র’ উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশসুপার (সদর) মো. হাফিজুল ইসলাম, বিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মো. মনিরুজ্জামান মনির, প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহিনুর আলম, সাধারণ সম্পাদক মশিহুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ