ব্যানারে মেয়রপ্রার্থী, কাউন্সিলরপ্রার্থী বললেন—‘আবেগের বশে’

  © সংগৃহীত

বিধি লঙ্ঘন করে দলীয় মেয়র প্রার্থীর ছবি সম্বলিত ব্যানার নিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করতে এসে সমালোচনায় পড়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে  নিজের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে আওয়ামী লীগ সমর্থিত এই কাউন্সিলর প্রার্থী বলেছেন, ‘আবেগের’ বশে তার এ ‘ভুল’ হয়েছে।

সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতার ব্যানারে দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপসের ছবি থাকায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালায় বলা আছে, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারে নিজের ছবি ও প্রতীক ছাড়া অন্য কারো নাম, ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে না। তবে কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে সে ক্ষেত্রে কেবল দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহার করা যাবে।

ব্যানারে মেয়রপ্রার্থীর ছবি ছাপিয়ে যে আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে, সে কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করে নেন আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, এটা আমার কিছুটা ভুল। আসলে ব্যানারে এমন একজন লোকের (ফজলে নূর তাপস) ছবি ব্যবহার করা হয়েছে যার বাবা আমাদের দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, মা ছোটবেলায় মারা গেছেন। তার প্রতি আমার আবেগ অন্যরকম। সেই আবেগ বা ইমোশনের জায়গা থেকে আমি ছবিটি ব্যবহার করেছি। যাই হোক, বিষয়টির জন্য আমি দুঃখিত। সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

নীলক্ষেত সংলগ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ক্লাবকে নির্বাচনী ক্যাম্প হিসাবে ব্যবহার করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও এই কাউন্সিলর প্রার্থীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, ক্লাবের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুমতি নিয়ে সেখানকার ভোটাররাই নিজ উদ্যোগে ওই ক্যাম্প করে দিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা নিয়ে গঠিত এই ওয়ার্ডের উন্নয়নে ১৯টি লক্ষ্য ও পরিকল্পনার কথা ইশতেহারে তুলেন আসাদুজ্জামান। প্রতিশ্রুতিগুলো হলো- মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আবর্জনা ও বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা; গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিশেষ সিকিউরিটি গেইট নির্মাণ করা; পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা; গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা; অত্যাধুনিক ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; তরুণদের উন্নয়নের জন্য যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা; শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে অভিভাবক ছাউনি নির্মাণ করা; বিনোদনের জন্য মিনি শিশু পার্ক স্থাপন করা; আইল্যান্ড ও ফুটপাতের সৌন্দর্য বর্ধন করা; মাদক নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা; বিশেষ টিমের মাধ্যমে যানজট নিরসন করা; নিয়মিত মশক নিধন কর্মসূচি পালন করা; নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; সন্ত্রাস ও ছিনতাই প্রতিরোধ করা; বিনোদন, মানসিক স্বাস্থ্য ও শারীরিক বিকাশে সুযোগ বৃদ্ধি করা; নিয়মিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা; আবাসিক ভবনে সুপেয় পানির ফিল্টার স্থাপন করা ও দ্রুতগতি সম্পন্ন ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করা।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি আগে থেকেই বিভিন্ন সমস্যায় এলাকার মানুষদের পাশে থেকেছি। আমি আশাবাদী আমার ইশতেহারের শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পারব।


সর্বশেষ সংবাদ