নেতিবাচকভাবে ভাইরাল হয়েছে ‘পারফর্মিং আর্টে’র সেই ছবি

২০১৯ সালে হাতিরঝিলের রাস্তায় (বাঁয়ে),  ১৯৬৮ সালে ভিয়েনার রাস্তায়
২০১৯ সালে হাতিরঝিলের রাস্তায় (বাঁয়ে), ১৯৬৮ সালে ভিয়েনার রাস্তায়  © টিডিসি ফটো

রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকার বেশ কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে একজন নারীকে একজন পুরুষ গলায় দড়ি ঝুলিয়ে ফুটপাত দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। যেটা ছিল ‘পারফর্মিং আর্ট’ ফ্রম পোর্টফোলিও অফ ডগডনেস। ছবির অভিনেত্রী সেঁজুতি সামাজিক মাধ্যমে এটিকে নেতিবাচকভাবে প্রচার হয়েছে বলে দাবি করেছেন।

সেঁজুতি এটাকে ‘সমাজতাত্ত্বিক’ ও ‘আচরণমূলক’ কেসস্ট্যাডি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি নিজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কন ও চিত্রায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। এই পারফর্মিং আর্টের উদ্দেশ্য, কার্টুনে যেমন বিভিন্ন প্রাণীকে মানুষের মতো কথা বলা ও আচরণগতভাবে দেখানো হয় তেমনি এখানে মানুষকে প্রাণী চরিত্রে দেখানো হয়েছে।

সেঁজুতি লেখক ক্লদিয়া স্লানারের লেখাকে উদ্ধৃত করে লিখেছেন, এই ছবিতে একজন নারী একজন পুরুষকে গলায় রশি বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বা আরো ভালো কোনো সামাজিক অবস্থার চিত্র দেখায় না। বরং সমাজ আমাদের ওপর যে সিস্টেম চাপিয়ে দিয়েছে সেটাই ফুটে উঠেছে। আমরা যে কাজটা করেছি এই কাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং এই কাজটাকে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিয়েছে সেটাই আমরা দেখতে চেয়েছি।

হাতিরঝিলে ভাইরাল হওয়া চিত্র

সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিতে আরিফুর রহমান শচীন নামে একজনে মন্তব্য করেছেন, ঘটনা টা যদি আমার সামনে ঘটত। আর কিছু না পারলেও বিনা দীধায় মহিলা টিকে দুটি চড় দিয়ে দৌরে পালিয়ে যেতাম। আফসোস, শত শত মানুষ শুধু ছবিই তুলেছে কেউ একটু জিজ্ঞাসাও পর্যন্ত করেনি যে এটা কি হচ্ছে বা এটা কি ধরনের জিনিস।

যদিও পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেঁজুতি, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পারফর্মিং আর্টের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেতিবাচকভাবে। সেখানে বলা হচ্ছে হাতিরঝিলে দেখা গেল মানব কুকুর কিংবা আমাদের সমাজে ঢুকে গেল পশ্চিমা নিম্ন প্রকৃতির সংস্কৃতি।

সেঁজুতি এই পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘রোগ হইলে যেমন ডাক্তারের কাছে যাওন লাগে কিন্তু তার আগে রোগটা নির্ণয় করতে হয়। এখন পরিচিত রোগের সাথে তো পরিচিত কিন্তু অপরিচিত/অজানা রোগ হইলে কেম্নে বুঝবা? এখন আমি অসুস্থ হইলে সেটা কষ্ট দেয় আগে কাকে! আমার পরিবারকে। আর আমরা অসুস্থ হইলে কাকে কষ্ট দেয়!! সমাজকে।

তিনি বলেন, সমাজ সুস্থ করতে হইলে আগে আমাদের সুস্থ থাকতে হবে তাই না? তাই আমরা সুস্থ আছি কিনা অইটা পরীক্ষা করলাম। কাটা দিয়ে কাটা তোলা বুঝে সবাই কিন্তু প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস কেউ মন দিয়ে করে না।

পশ্চিমা ধারণার এই পারফর্মিং আর্ট প্রথম দেখা যায় অস্ট্রিয়ার ভিয়েনার প্রকাশ্য রাস্তায় ১৯৬৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ভ্যালি এক্সপোর্ট ও পিটার উইবেল এই পারফর্মিং আর্টে অংশ নেন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল রাজধানী ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায়। এই পারফর্মিং আর্টের শিল্পীরা হলেন টুটুল চৌধুরী ও সেঁজুতি। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা সমালোচনা চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ