আসামে বাংলাদেশ হাই কমিশনের গাড়িবহরে হামলা

  © বিবিসি

ভারতের পার্লামেন্টে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইন পাশের বিরুদ্ধে আসাম রাজ্যে সহিংসতা এবং কারফিউ চলছে। এর পটভূমিতে গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ হাই-কমিশনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গুয়াহাটিতে বৃহস্পতিবারের মিছিল এবং বিক্ষুব্ধ লোকজনের মধ্য থেকে কিছু লোক মিশনের দুটো সাইনপোস্ট ভাংচুর করেছে। চ্যান্সেরি প্রাঙ্গণ থেকে যা প্রায় ত্রিশ গজ দূরত্বে অবস্থিত।

মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানানো জানতে পেরেছে যে, বুধবার ভারতে বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনারকে বহনকারী গাড়ি বিমানবন্দর থেকে শহরে আসার সময় নিরাপত্তা-বহরে হামলা চালায় নাগরিকত্ব বিলের বিরোধী উত্তেজিত জনতা।

এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলিকে ডেকে বাংলাদেশের হাইকমিশন কর্মকর্তার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় এবং হাইকমিশন প্রাঙ্গণে সাইনপোস্ট ভাংচুরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

তিনি বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তা -কর্মীদের এবং জিনিসপত্রের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিতের অনুরোধ করেন। গাঙ্গুলি নিশ্চয়তা দেন, ঘটনার পরপরই গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনের চ্যান্সেরি এবং বাসভবনে এলাকার নিরাপত্তা জোরদারের জন্য এই ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে সতর্ক করা হয়েছে।

ভারতের সংসদের উচ্চ কক্ষ রাজ্যসভায় বৃহস্পতিবার নাগরিকত্ব সংশোধন আইনটি পাশ হওয়ার পর থেকেই আসামের বিভিন্ন জায়গায় সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়। রাতভর বিক্ষোভের পর রাজ্যটিতে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে এপর্যন্ত দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু লোক।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ভারতের যথাযথ কর্তৃপক্ষ সহকারী হাই কমিশন এলাকা, কমিশনের কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তায় এরই মধ্যে ব্যবস্থা জোরদার করার পদক্ষেপ নিয়েছে। গাড়িবহরে হামলার ঘটনাকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেখা হচ্ছে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে। দুই প্রতিবেশী দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এর কোন প্রভাব পড়বে না বলে বাংলাদেশ মনে করে।

এদিকে সংসদে সিটিজেন শিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল বা সিএবি নামে পরিচিত এই বিতর্কিত বিলটির বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসসহ ভারতের বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল। ভারতের বিভিন্ন মুসলিম দলের নেতারাও বিলটিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন।

আসামে যারা এই বিলের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাদের বক্তব্য, বিলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আসামে আরও বেশি সংখ্যক বাঙালী হিন্দুর আসার পথ খুলে দেয়া হয়েছে। আসামে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় অহমীয়া জনগোষ্ঠীর সাথে বাংলাভাষী জনগণের বিরোধ চলছে। বিবিসি।


সর্বশেষ সংবাদ