পুষ্টির ঘাটতি পূরণে স্কুল টিফিনে ডিম অর্ন্তভুক্ত করার দাবি

  © টিডিসি ফটো

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুল টিফিনে ডিম অর্ন্তভুক্ত করে শিশুদের পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সামাজিক আন্দোলনের আহবান জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত ক্যাব’র পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্পের উদ্যোগে সিটি করপোরেশন, প্রাণী সম্পদ কার্যালয় ও ভোক্তাদের সাথে অনুষ্ঠিত অ্যাডভোকেসী সভায় এসব সুপারিশ করা হয়।

এতে বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কুল কর্তৃপক্ষ বা শির্ক্ষার্থীদের পরিবারের নিজস্ব উদ্যোগে টিফিন প্রদান করা হয়ে থাকলেও সেখানে পুষ্টির ঘাটতি পূরণে অত্যাবশ্যকীয় উপাদান ডিম অনেক সময় থাকে না। আবার শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশে পাশের দোকান থেকে নানা জাঙ্কফুড, ফাস্টফুড ক্রয় করে থাকেন। এসমস্ত খাদ্যগুলি স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে উৎপাদন করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে।

আরো বলা হয়, ঐ সমস্ত খাদ্যে পুষ্টির ঘাটতি কতটুকু পূরণ করা হবে তা নিশ্চিত নয়। সে কারণে অনেক শিক্ষার্থী অপুষ্ঠিতে ভুগছে, যার ফল গিয়ে দাড়াচ্ছে লেখা পড়ায় অমনযোগী, মেধা বিকাশ ও শরীর গঠনে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিফিনে ডিম অর্ন্তভক্ত করা হলে করা হলে তা শির্ক্ষার্থীদের পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে। একই সাথে সিটিকর্পোরেশনের আওতাধীন কাঁচা বাজারগুলির স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ অবকাঠামো উন্নয়ন করা সম্ভব না হলে বাজার থেকে ক্রয় করা সামগ্রী নিরাপদ হবে না বলে উল্লেখ করা হয়।

এসময় বলা হয়, বাজারগুলোয় যত্রতত্র ময়লা ফেলা, বজ্য অপসারণের কার্যকর সুবিধা না থাকায় জীবানু সংক্রমনের অন্যতম উৎসে পরিনত হয়েছে। আবার অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারনে বাজারগুলো ভোক্তা ও নারীবান্ধব নয়। তাই বাজারগুলোয় অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি ভোক্তাবান্ধব ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ উন্নয়নের আহবান জানানো হয়।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ রেয়াজুল হক জসিমের সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেসী সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আজম নাছির উদ্দীন। বক্তব্য রাখেন, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, নাহার এগ্রোর মহাব্যবস্থাপক ও প্রাণিসম্পদের সাবেক কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল হাই, থানা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শরমিন আক্তার, ডাঃ জাকিয়া খাতুন, ক্যাব দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব পাঁচলাইশের সেলিম জাহ্ঙ্গাীর প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দীন সিটিকর্পোরেশনের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় টিফিনে ডিম সরবরাহ করে শিক্ষার্থীদের পুষ্ঠির ঘাটতি পূরণে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান। সুষম খাদ্য ও পুষ্ঠির ঘাটতি পুরণে অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মাঝে সচেতনতা ও উদ্বুদ্ধকরন সভা আয়োজন, ডিম সম্পর্কে বিভ্রান্তি দূর করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

এছাড়াও সিটিকর্পোরেশনের আওতাধীন কাঁচা বাজারগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত, বাজারগুলোয় পোল্ট্রি কর্ণার স্থাপন, গবাদি পশুর পাশাপাশি পোল্ট্রির জন্য পৃথক কসাইখানা স্থাপনের বিষয়ে উদ্যোগ নেবার কথা জানান।

সভায় বলা হয়, বায়ো সিকিউরিটি সমৃদ্ধ (কন্ট্রোল শেড) খামারে ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করলে অ্যান্টিবায়োটিকের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। আর যত্রতত্র, অপরিষ্কার, অপরিছন্ন স্থানে মুরগি জবাই করে ভোক্তার কাছে মুরগি সরবরাহ করার কারণে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ ব্রয়লার মুরগি ঝুঁকির মধ্যে আছে। তাই স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ ব্রয়লার মুরগি পেতে হলে ফ্রোজেন (প্রক্রিয়াজাতকৃত) মুরগির বিকল্প নেই।

আরো বলা হয়, সুপারশপগুলোও তাদের ভেন্ডরদের মাধ্যমে যে সমস্ত উৎস থেকে মুরগি ক্রয় করে, সেখানেও অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত কিনা তা জানা সম্ভব হচ্ছে না। তাই ভোক্তাদের কাছে নিরাপদ ব্রয়লার মুরগির মাংশ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হলে উৎস স্থল মুরগির খামার থেকে গৃহিনীর রান্নায় পরিবেশন পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্যের অনুসরনীয় নিয়মাবলী কঠোর ভাবে মেনে চলার বিকল্প নেই।

এজন্য সুপার শপগুলোতে বায়োসিকিউরিটিযুক্ত, প্রাণী সম্পদ অফিসের সনদপ্রাপ্ত, যথাযথ মান পরীক্ষা নিশ্চিত করে বাজারজাতকৃত মুরগি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ড্রেসড (প্রক্রিয়াজাতকৃত) ব্রয়লার মুরগি বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করতে হবে বলে মত দেয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ