দাড়ি-টুপি নেই পীরের, মাইকে ফুঁ নিতে মানুষের ঢল (ভিডিও)

পীরের পানি পড়া নিতে মানুষের ঢল নেমেছিল কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায়। সুখিয়া ইউনিয়নের চর পলাশ গ্রামের মাঠে গতকাল এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পীর আসার খবরে সকাল থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ চর পলাশ মাঠে আসতে থাকেন। কেউ পানিভর্তি বোতল, কেউ বোতলে তেল নিয়ে সমবেত হন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো নারী-পুরুষের ভিড় জমে যায়। ছোট মঞ্চে দাঁড়িয়ে পীর কিছুক্ষণ ইসলামের আলোকে উপদেশ দেন। একপর্যায়ে সবাইকে বোতল উঁচু করে ধরতে বলেন। পরে মাইকে ফুঁক দেন।

বেলা ১১টার দিকে কবিরাজ সবুজ মিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। মাইকে তাঁর আগমনের সংবাদ জানিয়ে সবাইকে ধৈর্য ধরে শান্ত থাকতে বলা হয়। তিনি মঞ্চে উঠে তাঁর প্রতি অগাধ বিশ্বাস রাখতে ১৫ মিনিটের মতো উপদেশ বাণী শোনান। তিনি বলেন, ‘এখানে আজকে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছেন। যেহেতু এক এক করে বোতলে ঝাড়-ফুঁক দেওয়া সম্ভব নয়, তাই আমি মাইকে ফুঁক দেব। আর আপনারা পানি ও তেলের বোতল উঁচু করে ধরবেন। মাইকে আমার ফুঁকের আওয়াজ যে পর্যন্ত যাবে, সে পর্যন্ত তেল-পানির বোতল কাজ করবে। কেউ ধৈর্য হারাবেন না।’

এমন ঘোষণা শোনার পর চারপাশে অবস্থান করা হাজার হাজার নারী-পুরুষ তেল-পানির বোতল উঁচু করে ধরেন। কাঠুরিয়া কবিরাজ মাইকে ফুঁ দেন। এরপর উপস্থিত লোকজন বাড়ি ফিরে যান।

জানা যায়, সবুজ মিয়া নামের ওই কবিরাজের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার পাইলাবর গ্রামে। তিনি বনে কাঠ কেটে জীবিকা নির্বাহ করেন। সপ্তাহে চার দিন কাঠ কাটেন এবং তিন দিন কবিরাজি করেন। স্বপ্নে ফুঁ দেওয়ার এই তরিকা পেয়েছেন বলে দাবি তাঁর।

সুখিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ টিটু জানান, তিনি পীর নন, সাধারণ মানুষের মতই। তার নাম সবুজ। ময়মনসিংহের ভালুকায় তার বাড়ি।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মফিজুর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রেখে দ্রুততম সময়ে এ আয়োজন শেষ করা হয়েছে। পুলিশবাহিনীর সঠিক তৎপরতায় কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি।

কিশোরগঞ্জের জামিয়া ফারুকিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘কেউ একজন দূর থেকে মাইকে পানিতে ও তেলে ফুঁক দেবেন আর সেটা কাজ করবে, এটা ভ্রান্ত ধারণা। এটি কখনো বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমাদের নবীজি কখনো দূর থেকে এভাবে পানি বা তেলে ফুঁক দেননি।’


সর্বশেষ সংবাদ