১১ অক্টোবর ২০১৯, ২৩:৩৩

তরুণীর ডাকে বাসায় গিয়ে জিম্মি, পুলিশে উদ্ধার

গ্রেপ্তারকৃত তিন ছাত্র  © সংগৃহীত

মোবাইলে কথোপকথন চালিয়ে আসা এক তরুণীর ডাকে সাড়া দিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বাসায় গিয়ে কয়েক যুবকের হাতে জিম্মি হয়েছিলেন এক ব্যক্তি, পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধারের পাশাপাশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তিন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে।

শুক্রবার সকালে নগরীর খুলশী থানার জাকির হোসেন রোড থেকে মুক্তিপণের চেক নিতে আসা একজনকে আটকের পর ওই বাসা থেকে ৩৮ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার এবং দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তাররা হলেন- ইফতেখারুল ইসলাম (২৫), মোহাম্মদ তালিম উদ্দিন (২৪) ও সালেহীন আরাফাত (২৮)। এদের মধ্যে ইফতেখারুল চট্টগ্রাম কলেজের ইসলামের ইতিহাস দ্বিতীয় বর্ষ, তালিম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসি’র ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র এবং আরাফাত ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনির্ভাসিটির ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে বিএসএসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন।

ওসি প্রণব বলেন, “উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্ব পালনে গেলে ১৮ বছরের এক তরুণীর সাথে পরিচয় ও মোবাইল নম্বর দেওয়া-নেওয়া হয়। বিভিন্ন সময়ে তাদের মধ্যে কথা-বার্তার এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার মেয়েটি ওই ব্যক্তিকে আকবর শাহ থানার বিশ্বকলোনীর ডি ব্লকে তার বাসায় যেতে বলেন।

“তিনি ওই বাসায় যাওয়ার কিছুক্ষণ পর গ্রেপ্তার তিনজনসহ চার যুবক বাসাটিতে ঢুকে তাকে আটকে ফেলে এবং টাকা না দিলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তখন ওই ব্যক্তি বিকাশে ২৪ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করলেও ওই যুবকরা আরও টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।”

পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তিকে সারা রাত আটকে রাখার এক পর্যায়ে সকাল ৬টার দিকে তার বোনকে খালি চেক নিয়ে ইউএসটিসির সামনে আসতে বলা হয়। তখন তার বোন ৯৯৯ ফোন করে ঘটনাটি জানালে সেখান থেকে খুলশী থানায় অবহিত করা হয়।

পরে খুলশী থানা পুলিশের একটি টিম ওই মেয়েটিকে নিয়ে ইউএসটিসির গেইটে অবস্থান নেয় বলে জানান ওসি প্রণব।  

এ সময় তালিম চেক নিতে এলে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে আটক করেন। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে বিশ্বকলোনী ডি ব্লকে জেরিন ম্যানসন নামে একটি ভবনের পাঁচতলায় একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ইফতেখারুল ও সালেহীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে প্রতারণাকারী তরুণী ও তাদের এক সহযোগী সেখান থেকে পালিয়ে যায় বলে জানান ওসি।

তিনি বলেন, “যে ভবন থেকে অপহৃতকে উদ্ধার করা হয় সে ভবনের মালিক ইফতেখারুলের বাবা। ওই ভবনের পঞ্চম তলার একটি বাসায় ওই তরুণীকে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। নিচের তলায় থাকে তারা।”

ঘটনাস্থল আকবর শাহ থানা এলাকায় হওয়ায় এই ঘটনা নিয়ে ওই থানায় মামলা হয়েছে জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা প্রণব বলেন, “আমরা তিন আসামিকে সেখানে হস্তান্তর করেছি। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে, ওই তরুণীকে দিয়ে এই যুবকরা এ ধরনের আরও কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে। হয়ত টাকা দিয়ে ভিকটিমরা বিষয়টি সমাধান করে পুলিশকে জানায়নি।”