শিক্ষা বোর্ডে ৩৩ অনিয়ম

  © ফাইল ফটো

দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোতে ৩৩ ধরনের অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন ধরনের কেনাকাটা, কেনাকাটার অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারের ট্যাক্স ও ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। বোর্ডগুলোতে আয়ের সঙ্গে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট হিসাবেও রয়েছে গড়মিল। দেখানো আয় ব্যাংক হিসাবে জমা না পড়ার ঘটনাও চিহ্নিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার ও রাজস্ব অডিট অধিদফতর গত দুই মাস ধরে দেশের আটটি শিক্ষা বোর্ডে সরেজমিন নিরীক্ষা করে। এরপর এ সংক্রান্ত বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বোর্ডগুলোতে সবমিলিয়ে ১৬৭ কোটি টাকার অনিয়ম পাওয়া গেছে। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে আটটি শিক্ষা বোর্ডে এসব অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। প্রতি বছরের মতো ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে দেশের আটটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ডের বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন জামা দেয়া হয়েছে। এতে ৩৩ ধরনের অনিয়ম ও অর্থ অপচয়ের তথ্য উঠে এসেছে।

তার মধ্যে রয়েছে- প্রাপ্য না হওয়া সত্ত্বেও জেএসসি পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন করা, পরীক্ষা পরিচালনা এবং ফলাফল প্রকাশ সংক্রান্ত কাজে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্মানি প্রদান করা, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় নম্বরপত্র ও সনদপত্র লিখন, যাচাই, স্বাক্ষর ও পাঠানোর কাজে প্রাপ্যতার অতিরিক্ত সম্মানী প্রদান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ব্যবহারিক উত্তরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রদান, অনলাইন নিবন্ধনের জন্য অর্থ আদায়, সম্মানীর বিল থেকে নির্ধারিত হারে উৎসে আয়কর কর্তন না করা।

এসব অনিয়মের মধ্যে আরও রয়েছে- শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত হারের চেয়ে কম হারে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের সুদ আদায় করা, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড তহবিল ও বিজি প্রেসকে অনিয়মিতভঅবে অর্থ পরিশোধ, ঠিকাদারের বিল হতে ভ্যাট কর্তন না করা, ক্যাশ বইয়ের হিসাব অনুযায়ী ব্যাংক হিসাবে অমিল, গাড়ি ক্রয়ে সরকার নির্ধারিত হারে চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে ক্রয়, বিভিন্ন খাতে বাজেট বরাদ্দ অপেক্ষায় অতিরিক্ত ব্যয়, অনিয়মিতভাবে চাহিদা তৈরির মাধ্যমে কম্পিউটার সামগ্রী ক্রয় বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা ব্যতিত সম্পদ সংগ্রহ খাতে অনিয়মিত ব্যয়, ব্যাংকের এফডিআর, সঞ্চয় হিসাব হতে প্রাপ্ত আয় হিসাবে অন্তর্ভুক্তি না করা, হিসাব বইতে আয় কম দেখানো।

ঠিকাদারদের পরিশোধিত বিলে গড়মিল করা, বিভাগীয় কাজে প্রদান করা অগ্রিম অর্থ সমন্বয় না করা, আবাসিক বাসায় বাসায় বসবাসরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্যাস বিল বাবদ অতিরিক্ত অর্থ প্রদান, পরিশোধিত বিল হতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অর্থ ফেরত প্রদান করা, মডেল কলেজের আয় বোর্ড তহবিলে জমা না করে মডেল কলেজের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বোর্ড থেকে প্রদান, অর্থ লেনদেনে ক্যাশ বই যথাযথ সংরক্ষণ না করা, কর্মচারীদের সার্ভিসবুকে চাকরি সংক্রান্ত কোনো তথ্য সংরক্ষণ না করা, পুরাতন গাড়ি অকেজো ঘোষণা করা সত্ত্বেও সেগুলো বিক্রয় না করাসহ অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, প্রণোদনা না দিলে বোর্ডে তো কাজই উঠবে না। কেননা, বিভিন্ন পরীক্ষার সময় কাজ করতে করতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাতও পার হয়ে যায়। এসব বিবেচনা করে বোর্ড কমিটিই প্রণোদনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেটা অনুযায়ীই দেয়া হয়েছে। কোনো অনিয়ম নেই বলে দাবি করেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ