৩৭৯ বছর ধরে জামাত হচ্ছে ধানমন্ডির শাহি ঈদগাহে

ধানমন্ডি শাহী ঈদগাহ ঢাকার ধানমন্ডি থানায় অবস্থিত একটি প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা। সাত মসজিদ রোডের মাঝামাঝি জায়গায় রাস্তার পূর্ব দিকে উঁচু ভূমির ওপর প্রাচীন স্থাপনাটি দেখা যায়। এখানেই ৩৭৯ বছর ধরে ঈদের নামাজ আদায় করছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। ১৬৪০ সালে বাংলার সুবাদার সম্রাট শাহজাহানের পুত্র শাহ সুজার প্রধান অমাত্য মীর আবুল কাসেম ধানমন্ডির শাহী ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন।

আজ সোমবার সকাল আটটায় ধানমন্ডির ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহতে প্রতিবছরের ন্যায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সেই মোগল আমল থেকে শুরু করে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে এখানে ঈদের নামাজ আদায়ের কথা জানা যায়। সেই সময়ে ঢাকার নওয়াব বাড়ি আহসান মঞ্জিল থেকে তোপধ্বনি করে চাঁদ ওঠার খবর জানানোর রেওয়াজ ছিল। ঈদের দিন নানা রঙের পতাকা হাতে নিয়ে ঈদ মিছিল সহকারে ধানমন্ডি ঈদগাহে নামাজ পড়তে যাওয়া হতো। এরপর কালের পরিক্রমায় অনেক পরিবর্তন এসেছে ঢাকার, হারিয়ে গেছে অনেক কিছুই। তবে ধানমন্ডির শাহি ঈদগাহ বিলুপ্তির কবল থেকে টিকে গেছে। এখানে প্রতিবছর দুই ঈদে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। এলাকার অন্যতম বড় ঈদ জামাত এখানেই হয়।

ঢাকার ইতিহাসবিষয়ক বিভিন্ন গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, মোগল আমলে সুবাদার, নায়েবে নাজিম, অমাত্য (মন্ত্রী) ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এই ঈদগাহেই নামাজ আদায় করতেন। মূল শহর থেকে বেশ দূরে ছিল ঈদগাহটি। মূল শহর অর্থাৎ পুরান ঢাকায় ছোট ছোট বেশ কয়েকটি সুলতানি ঈদগাহ থাকলেও বড় আকারের কোনো ঈদগাহ ছিল না। তাই মীর আবুল কাশিম ঈদগাহের জন্য জায়গা খুঁজতে থাকেন। অবশেষে তিনি এ এলাকা বেছে নেন। কাজেই মূল নগর থেকে কিছুটা দূরে খোলা জায়গায় এবং সাত মসজিদের কাছে হওয়ায় ধানমন্ডি এলাকায় ঈদগাহটি নির্মিত হয়।

গবেষক লেখক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন উল্লেখ করেছেন, ‘এর পাশ দিয়ে তখন বয়ে যেত পাণ্ডু নদীর একটি শাখা। এই শাখা জাফরাবাদে সাত গম্বুজ মসজিদের কাছে মিলিত হতো বুড়িগঙ্গার সঙ্গে।’ মোগল শাসক ও তাঁদের অমাত্যরা বেশ জাঁকজমকের সঙ্গেই বুড়িগঙ্গা পারের ঢাকা শহর থেকে প্রায় এক ক্রোশ দূরের এই ঈদগাহে আসতেন নামাজ আদায়ের জন্য।


সর্বশেষ সংবাদ