প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে স্থানীয় হিন্দু-মুসলিমদের যত অভিযোগ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগের পিছনে প্রিয়া সাহার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক স্বার্থ অর্জনের চেষ্টা রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার নিজ বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সাধারণ মানুষের মুখেমুখে এই একই কথা। এছাড়া বিভিন্নভাবে স্থানীয় হিন্দু-মুসলিমদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিলেন তিনি।

নাজিরপুর উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ-খৃষ্টার ঐক্য পরিষদের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার রায় জানান, চলতি বছরের ২ মার্চ রাতে চরবানিয়ারীতে প্রিয়া সাহার ভাই জগদীশ চন্দ্র বিশ্বাসের একটি অব্যবহৃত ঘরে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

প্রিয়া সাহা তার নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য নাজিরপুর উপজেলার চরবানিয়ারি গ্রামে তার ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় অনেক কয়েক জন হিন্দু/মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনকে হয়রানি করে আসছেন। যে ঘটনাকে মিথ্যাভাবে সাজিয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে উপস্থাপন করেছেন, তা মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকৃতপক্ষে এ ঘটনায় স্থানীয় কয়েকজন নিরহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে তিনি আসামী করে হয়রানি করছেন।

স্থানীয়রা আরো জানান, দুই মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করার কারনে তাদের গ্রিনকার্ড পাইয়ে দেয়া ও নিজেকে ওই দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার আশাই প্রিয়া সাহা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এ সব ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। তারা বলেন, স্থানীয় মুসলামান-হিন্দুদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নষ্ট করার জন্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিনি এ সব মিথ্যা কথা বলেছেন।

নাজিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অমূল্য রঞ্জন হালদার জানান, নাজিরপুরে কোন সংখ্যালঘু নির্যাতন বা গুমের ঘটনা নেই। প্রিয়া সাহার বক্তব্য মিথ্য ভিত্তিহীন ও উস্কানিমূলক।

উপজেলা মানবাধীকার কমিশনের সভাপতি মো. আতিয়ার রহমান চৌধুরী নান্নু’র কাছে প্রিয়া সাহার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রিয়া সাহা যে বাড়িটি নিয়ে কথা বলেছেন ওই বাড়িটি তাদের নয়। বড়িটি একটি পরিত্যাক্ত বাড়ি। দেশের বিরুদ্ধে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। আমি তার শাস্তি দাবী করছি।

জেলা পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম জানান, পিরোজপুর একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জেলা। আমি সম্প্রতি এখানে যোগদান করলেও খোঁজ নিয়ে জেনেছি এখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামার কোন অভিযোগ নাই । তবে প্রিয়া সাহার পৈত্রিক নিবাস জেলার নাজিরপুরে গত ২ মার্চ রাতের অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি তদন্তাধীন ও সে ব্যাপারে ২টি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা ২টি তদন্তাধীন রয়েছে।

‘শারি’ নামে বাংলাদেশের দলিত সম্প্রদায় নিয়ে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক হলেন প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয় বালা বিশ্বাস। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘দলিত কন্ঠ’ নামক একটি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক।

প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয় বালা বিশ্বাস (৫৪) পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের চরবানিয়ারী গ্রামের মৃত নগেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের মেয়ে। তার শ্বশুর বাড়ি যশোর জেলায়। প্রিয় বালার স্বামী মলয় কুমার সাহা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সদর দফতরে সহকারি উপ-পরিচালক পদে কমর্রত রয়েছেন। তার দুই মেয়ে প্রজ্ঞা পারমিতা সাহা ও ঐশ্বর্য লক্ষ্মী সাহা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করেন।


সর্বশেষ সংবাদ