বিপৎসীমার উপরে তিস্তা, সর্তকতা

  © সংগৃহীত

টানা ভারী বর্ষণ আর অব্যাহত উজানের ঢলে তিস্তার পানি দোয়ানি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করায় তিস্তা ব্যারেজ এলাকা ও চরাঞ্চলে পানি উন্নয়ন বোর্ড রেড এলার্ট জারি করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি প্রবাহ দোয়ানি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির উচ্চতা ৫২.৯৫ সেন্টিমিটার। পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাটে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড নদী ভাঙন। গত দু’দিনে তিস্তার ভাঙনে শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। ঢলের গর্জনে পানিবন্দি এসব মানুষের চোখে এখন ঘুম নেই। অন্যদিকে পাঁচদিন ধরে রান্না করতে না পারায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে ভুগছেন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রায় ২৫ হাজার পরিবার এখন দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। এদিকে ধরলার পানি কুলাঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দুপুরে তিস্তার পানি ব্যারেজ পয়েন্টে একটু কম থাকলেও সন্ধ্যা ৬টার দিকে হঠাৎ উজানের ঢলে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে।

ব্যারাজ রক্ষায় ওই এলাকা ও চরাঞ্চলে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, জেলার বন্যাদুর্গত পরিবারগুলো জন্য ১১শ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার প্রায় ১২শ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান, ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলে দেশের ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। একই সঙ্গে তিনি বন্যা আক্রান্ত হতে পারে এমন জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলেও গণমাধ্যমকে জানান।

বন্যপরিস্থিতি মোকাবিলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে দুই কোটি ৯৩ লাখ টাকা, সাড়ে ১৭ হাজার টন চাল এবং ৫০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার। এসব জেলায় দু’এক দিনের মধ্যে পৌঁছে যাবে ৫০০ তাবু, তৈরি করা হয়েছে মেডিকেল টিম।


সর্বশেষ সংবাদ