ছয় ফাইনাল হারের পর সপ্তম সুযোগ আজ

আয়ারল্যান্ডে চলমান ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ডাবলিনের মালাহাইড পার্কে শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে চারটায় মুখোমুখি হবে দুই দল। বাংলাদেশ এর আগে মোট ছয়বার বিভিন্ন ত্রিদেশীয় বা বহুজাতিক সিরিজ বা টুর্নামেন্ট খেলেছে, যার প্রতিটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ।

এবার বাংলাদেশ পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ফেভারিট হিসেবে খেলছে - দুই প্রতিপক্ষকেই তিন ম্যাচে বেশ সহজেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। তাই এটিই কি বাংলাদেশের জন্য সেরা সুযোগ?

বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের একজন সাবেক সদস্য, বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার সাথিরা জেসি বলেন, এটাই নিঃসন্দেহে সেরা সুযোগ বাংলাদেশ দলের জন্য। ‘‘বাংলাদেশ এই পর্যন্ত সবগুলো ম্যাচে জিতেছে, একটা দারুণ শেপে আছে বাংলাদেশ দল - সবাই ভালো ফর্মে আছে।’’

বাংলাদেশ দলের একটা উদ্বেগের বিষয় থাকে ব্যাটিং নিয়ে, কিন্তু চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজে ব্যাটিং দুর্দান্ত করছে বাংলাদেশ। তিনটি ম্যাচের ২৬১, ২৪৭ ও ২৯৪ রান যথাক্রমে ৮, ৫ ও ৬ উইকেট হাতে রেখেই টপকে যায় বাংলাদেশ।

ফাইনাল ম্যাচে বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণ কী?
সাকিব আল হাসান আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটিতে অর্ধশতক হাঁকানোর পর চোটের কারণে রিটায়ার্ড হার্ট হন। সাকিব আল হাসানের সর্বশেষ অবস্থা এখনো পর্যবেক্ষণের মধ্যে আছে। যদি সাকিব না থাকেন, সেটা বাংলাদেশের জন্য দু:শ্চিন্তার কারণ হতে পারে। তিন ম্যাচে মাত্র একবার আউট হয়েছেন সাকিব - ১৪০ গড়ে ৩ ম্যাচে ১৪০ রান তুলেছেন তিনি।

সাকিব আল হাসান বল হাতে তিন ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন মাত্র দুটি, কিন্তু বেশ কম রান দিয়েছেন তিনি - ৪.৩১ গড়ে দিয়েছেন ১২৫ রান। তবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যানও আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। শাই হোপ ৪ ইনিংসে ৯৯ গড়ে ৩৯৬ রান তুলেছেন, যেখানে ২টি সেঞ্চুরি ও একটি হাফ-সেঞ্চুরি আছে। আর সুনীল আম্ব্রিস ৪ ম্যাচে তুলেছেন ২০৯ রান, একটি সেঞ্চুরি। তবে প্রথম ম্যাচে রেকর্ড গড়া পার্টনারশিপে থাকা জন ক্যাম্পবেল এক ম্যাচে ১৭৯ করে আর মাঠে নামতে পারেননি চোটের কারণে।

ফাইনাল ম্যাচ বলেই কি এতো উদ্বেগ?
‘যে কোনো ফাইনাল, যে কোনো দলের সাথে, একটা চাপ থাকেই,’ বলছিলেন সাথিরা জেসি। ‘‘যেহেতু ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে খেলা আর তাদের পুরো স্কোয়াড - যেটা বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত হয়েছে - তারা সবাই এখানে নেই, সেক্ষেত্রে আসলে সহজই হতে পারে এই ম্যাচটি।’’

পূর্ব-অভিজ্ঞতা কী বলছে?
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত মোট ছয়টি বহুজাতিক টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই ফাইনালগুলোর মধ্যে বেশ কিছু ম্যাচ বহুল আলোচিত।

২০০৯, ত্রিদেশীয় সিরিজ ফাইনাল
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে বাংলাদেশ শুরুতে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৫২ রানে অল-আউট হয়ে যায়। তবু নাজমুল হোসেন, মাশরাফী বিন মোর্ত্তজারা মাত্র ৬ রানে ৫ উইকেট ফেলে দিয়ে বাংলাদেশ দলকে জয়ের আশা দেখান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুত্তিয়া মুরালিধরন ১৬ বলে ৩৩ রানের একটি ইনিংস খেলে শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটের জয় এনে দেন।

২০১২, এশিয়া কাপ ফাইনাল
সাকিব আল হাসান, মাশরাফী বিন মোত্তর্জা, আব্দুর রাজ্জাকরা এই ম্যাচে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে পাকিস্তানকে আটকে রাখেন ২৩৬ রানে। জবাব দিতে নেমে তামিম ইকবাল ৬০ রান করেন। তবে নাজিমুদ্দিন ও নাসির হোসেন বেশ ধীরগতির ইনিংস খেলেন। সাকিব আল হাসান তার ৬৮ রানের ইনিংসে এবং মাশরাফী-রিয়াদ ক্যামিও দিয়ে চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ২ রান কম করে বাংলাদেশ।

২০১৬, এশিয়া কাপ ফাইনাল
আগের দুটো ম্যাচের মতো উত্তেজনা এই ম্যাচটিতে ছিল না। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের করা ১২০ রান ভারত ৭ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই টপকে যায়। ২০১৮ তে বাংলাদেশ মোট তিনটি ফাইনাল ম্যাচ হারে। ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে হারে শেষ বলে। ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপের ফাইনালেও বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে শেষ বলে ৩ উইকেটে হেরে যায়। [বিবিসি বাংলা]


সর্বশেষ সংবাদ