বাবার জুতাপেটার বিনিময় ছেলের লাশ!

  © সংগৃহীত

রাজশাহীর জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় জসিম উদ্দিন নামে এক স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা যায়, আগের রাতে তারাবির নামাজ রেখে তার বান্ধবীর সাথে দেখা যায় জসিম। এসময় স্থানীয়রা তাদের দেখে ফেললে এ অপরাধে রাতে তাদের বিচার হয়। বিচারে বাবা জসিমকে ‍জুতা পেটা করলে সে রাতে বাসায় না ফিরে একটি গাছের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ি থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে গোদাগাড়ী উপজেলার সরমংলা খাড়ির পাশের একটি গাছে তার লাশ ঝুলতে দেখতে পান স্থানীয়রা। এরপর পুলিশে খবর দিলে তারা লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

নিহত জসিম পিরোজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

এ বিষয়ে জসিমের বড় ভাই রাশিদুল বলেন, বুধবার রাতে তারাবির নামাজের সময় জসিম বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে তার বাবা মজিবুর রহমান সেখানে যান। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে গ্রাম্য সালিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার বাবা জসিমকে ২০ বার জুতাপেটা করে। এরপর সালিশ থেকে বের হয়ে আর সে বাড়ি ফেরেনি।

এদিকে সালিশ বৈঠক করার কথা স্বীকার করলেও জসিমকে জুতাপেটা করার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার এক স্কুলছাত্রীর সঙ্গে জসিমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এলাকার মাঠে তারা দুজন দেখা করে। তখন স্থানীয়রা তাদের একটি বাড়িতে আটকে রাখে। পরে রাতেই গ্রাম্য সালিশ বসানো হয়। সেখানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রফিকুল ইসলাম জসিমের বাবাকে দিয়ে তাকে জুতাপেটা করান। লোকলজ্জায় রাতেই সরমংলা খাড়ির পাশের একটি গাছে রশি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে গ্রাম্য সালিলে জুতাপেটার অপমান সহ্য করতে না পেরেই জসিম আত্মহত্যা করেছে। জসিমের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ