গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ বছর পূর্তি আনন্দ ও উল্লাসের

  © ফাইল ফটো

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ বছর পূর্তি নিঃসন্দেহে আনন্দ ও উল্লাসের। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমার প্রত্যক্ষ ও সরাসরি সম্পর্ক একযুগেরও বেশি সময়ের। আর পরোক্ষভাবে সম্পর্ক এর প্রতিষ্ঠারও পূর্ব থেকে। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখা প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং স্বপ্নদ্রষ্টা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের শ্রীপুর উপকেন্দ্র আশির দশকে ‘কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই’ শিরোনামে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সেই কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ আমার হয়েছিলো। তখনই উপলব্ধি করেছিলাম ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্বপ্ন একদিন সাফল্যের মুখ দেখবেই।

মাঝে আমি কিছুদিন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ছেড়ে গেলেও গণস্বাস্থ্য পরিবারের সাথে আমার সম্পর্ক অটুট ছিলো। বিভিন্ন পালা-পার্বণে আমি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপস্থিত থেকেছি। পরবর্তীতে ২০০০ সালে ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আহবানে সাড়া দিয়ে আবার যখন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফিরে আসি। তখন গণ বিশ্ববিদ্যালয় পরিপূর্ণভাবে তার কার্যক্রম শুরু করেছে। তারপরে তো পর্যায়ক্রমে আমিও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে ভালোমন্দের অংশীদার হয়েছি।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ভালো ভালো অর্জন আছে, আছে কিছু ব্যর্থতাও। এই সামান্য কিছু ব্যর্থতার জন্যে হয়তোবা কেউ কেউ নেতিবাচকভাবে গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে চিহ্নিত বা উপস্থাপনার চেষ্টা করেন, যা কখনোই কাম্য নয়। আমরা আমাদের ব্যর্থতা স্বীকার করি, কিন্তু অসংখ্য ভালো বিষয়গুলোকে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে কার্পণ্য করি, এটাও ঠিক নয়।

এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গত বিশ বছরে অসংখ্য শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জন করে দেশে বিদেশে সুনামের সাথে কাজ করছেন। উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চতর পদে কাজ করছেন। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পদ্ধতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুরূপ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অসংখ্য গুণী ও খ্যাতিমান শিক্ষক কাজ করেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধ, জেন্ডার স্টাডিজ, নীতিবোধ ও সমতা পড়ানো হয়, দেশের প্রথিতযশা রাষ্ট্রচিন্তাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুণীজনকে সম্মাননা দেয়া হয়, শিক্ষার্থীদের সাথে পরিচিত করানো হয়।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়েই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সাংবাদিক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের ক্রীড়া ক্ষেত্রে ঈর্শনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। প্রমীলা খেলোয়াড়েরা দেশে বিদেশেও সুখ্যাতি অর্জন করেছে। দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শুধুমাত্র গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ রয়েছে।

এই সব ইতিবাচক দিকগুলিকে সামনে আনলে সামান্য যা দুর্বলতা আছে তা অনুল্লেখযোগ্য। তারপরেও সেগুলিকে আমরা কাটিয়ে তোলার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার কোন অভাব নেই।

অবিরামভাবে তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের এক নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস প্রফেসর, দেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী সর্বজন শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের টাস্টি বোর্ডের সভাপতি। এমন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেশে আর ক’টি আছে?

লেখক: পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, গণ বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ