বেঁধে রেখে মাথায় ডিম ভেঙে জন্মদিন উদযাপন!

  © ফাইল ফটো

ছুটির দিন। পুরো সপ্তাহের ক্লান্তি দূর করতে বিকেলে গুলশান লেকের পাশ দিয়ে হাতিরঝিল যাচ্ছিলাম। পথে দেখছি একটা ছেলেকে গাছের সঙ্গে বেধে রাখা হয়েছে। আপাতত দৃষ্টিতে বুঝতে না পারলেও পরে বুঝলাম তার আজকে জন্মদিন। বন্ধুরা গাছের সঙ্গে বেধে মাথায় ডিম ভেঙে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।

প্রত্যেক মানুষের এক একটি বিশেষ দিন থাকে। সে বিশেষ দিনে, তার বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে কিছু ভালো মুহূর্ত অতিবাহিত করে। অনেক শুভাকাঙ্ক্ষীরা শুভেচ্ছা জানালেও কিছু বন্ধুদের শুভেচ্ছা জানানোর ধরণ গাছে বাধার মতো একটু বিব্রত করে দেয় তাকে।

কেউ কেউ বন্ধুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বিভিন্ন অশালীন ভাষায় ফেসবুকে পোস্ট করে থাকেন। ‘হেপি পয়দা দিবস, শুক্রবারে হাসপাতালে ডাক্তার থাকে না তুই কেমনে হইলি’ ইত্যাদি মন্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুভেচ্ছা জানান। যেটির একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তার উপর। এ বিশেষ দিনটির জন্য এই বিব্রত বিষয়টি মাথা পেতে নিতে হয় তাকে।

এটা শুধু ঢাকা শহর নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও এমন ঘটনা অহরহ হচ্ছে। সম্প্রতি দেশের জাতীয় বেশ কয়েকটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, ল্যাম্পপোষ্টের সঙ্গে দুই হাত এবং কোমরে রশি বেঁধে ৩৫ বন্ধু ৩৫টি ডিম এক বন্ধুর (যার জন্মদিন) মাথায় ভেঙে তাঁর জন্মদিন উদযাপন করেছেন। পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের অফিস মহল্লায় এ ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে সিরাজগঞ্জে তোহা নামে এক কলেজছাত্রকে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে পচা ডিম, আটা-ময়দার ভুসি এবং নানা ধরনের নোংরা ময়লা-আবর্জনা মাথায়সহ সারা শরীরে মেখে জন্মদিন পালন করেছে তার বন্ধুরা। তোহা শহরের ভাসানী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র।

এসব ঘটনায় বিব্রত সমাজের সুশীল শ্রেণী। অভিভাবকরাও এসব বিষয়টা অনেকটা ক্ষুদ্ধ। তাই আমাদেরকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর ক্ষেত্রে এসব বিব্রত বিষয়গুলো পরিহার করে বন্ধুদের কষ্ট বা সুখ ভাগ করে নিয়ে শান্তিময় নতুন জীবন ধারণের জন্য উৎসাহিত করতে হবে। এই পরিবার আমাদের, এই সমাজ আমাদের, এই দেশ আমাদের। তাই আমরাই সচেতন হবো, সমাজের পরিবর্তন আনব, দেশকে ভালোবাসবো এবং সমাজকে সমৃদ্ধি করব।

লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ


সর্বশেষ সংবাদ