ইজতেমা মসল্লিদের ছবি তুলতে গিয়ে ইট-পাথর হামলার শিকার পর্যটকরা

মানি রহমান
মানি রহমান  © ফেসবুক

২০২০ সাল চলে এলো, কিন্তু আমাদের অসভ্যতা কোনোদিক থেকে কমলো না। দিনে দিনে আরো বর্বর হচ্ছি আমরা।

প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমার সময় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য বিদেশি ফটোগ্রাফার তথা পর্যটক আসে আমাদের দেশে। শুধু এই ইভেন্টের ছবি তুলতে। প্রতি বছরই আমি এই সময়ে ট্যুরিস্ট নিয়ে ইজতেমার এলাকায়/রেলস্টেশনে ঘুরি। ‘মানুষ ভর্তি ট্রেন’ এই ছবি তাদের কাছে খুবই ইন্টারেস্টিং।

মানুষ ভর্তি ট্রেন আসতে থাকে, ট্যুরিস্টরা প্রস্তুত হয় ক্যামেরা হাতে নিয়ে। একের পর এক ক্লিক দিয়ে ভাল ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে তারা। এর মধ্যেই হঠাৎ ইট-পাথর পড়ার শব্দ হতে থাকে, একটু খেয়াল করে দেখলাম মাথায় টুপি পরিহিত অবস্থায় হাতে কিছু যুবক পাথর নিয়ে ট্যুরিস্টদের দিকে ছুড়ে মারতেছে। কারো মাথায় লেগে রক্ত ঝরছে তো কারো ক্যামেরার লেন্স ভেঙ্গে গেছে এরকম ঘটনা বেশ কয়েকবার দেখেছি।

অন্যান্য বছরের মত এবারো আমি সেখানে ট্যুরিস্ট নিয়ে গিয়েছিলাম, আমার সাথে থাকা মহিলা ট্যুরিস্ট দেখে সদ্য ‘আখেরি মোনাজাত’ শেষ করে আসা তথা আল্লাহর কাছে সারাজীবনের কৃতকর্মের গুনাহের ক্ষমা চেয়ে আসা কিছু মানুষ মধ্যাঙ্গুলি দেখাতে শুরু করে, পাথর ছুড়তে শুরু করে।

মাথায় টুপি পরা অবস্থায় ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজিতে ‘অশ্লীল বাক্য’ বলতে থাকে। আমি খুব দ্রুত ট্যুরিস্টদের নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে যাই ও অবাক চোখে তাকিয়ে থাকি ওই মানুষ গুলার দিকে আর ভাবতে থাকি ঢাকা শহরে এখনো আদিম যুগের মানুষ আছে? যারা তাদের চেয়ে দেখতে ভিন্ন কোনো মানুষ/প্রাণী দেখলেই হামলা করতে উঠে পড়ে বা হিংস্র হয়ে উঠে আর আঘাত করে বুনো উল্লাসে ফেটে পড়ে!! মাথায় কাজ করেনা মাঝে মধ্যে।

পৃথিবীতে সবচেয়ে কম ট্যুরিস্ট আসা দেশগুলার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম একটা দেশ। তার উপর এমন যদি হয় আমাদের অবস্থা, কে আসবে এই দেশে? এবার তোরা মানুষ হ।

লেখক: ফ্রিল্যান্স টুর গাইড


সর্বশেষ সংবাদ