আমি নিশ্চিত— বঙ্গবন্ধু এই আয়োজন দেখলে ধমক দিয়ে থামাতেন

শরিফুল হাসান
শরিফুল হাসান  © ফাইল ফটো

আমি নিশ্চিত বঙ্গবন্ধু আজ এই আয়োজন দেখলে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিতেন। আচ্ছা শতবর্ষ উদযাপনে লেজার লাইট দিয়ে বঙ্গবন্ধু হেঁটে যাচ্ছেন এই আইডিয়া কার‌ আচ্ছা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত ভালো একটা সিনেমার নাম বলুন। একটা ভালো ডকুমেন্টারি বা প্রামাণ্যচিত্রের নাম বলতে পারেন কেউ? গোটা দশেক ভালো বই? একটা ভালো নাটক? একটা ভালো উপন্যাস কিংবা কোন শিশু সাহিত্য কী আছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে? এই শহরে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ কোন ভাষ্কর্য আছে কী? ডিজিটাল ডিজিটাল বলে গলা ফাটিয়ে ফেলা দেশে শুধু বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোন ইন্টারনেট সাইট কি আছে? না থাকলে কেন নেই? কে জবাব দেবে?

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণ গণণার অনুষ্ঠানে রেজার আলো দিয়ে এই জিনিষ বানানোর ভাবনা আর হাস্যকর বাস্তবায়ন দেখে কথাগুলো মনে এলো। ভীষণ কষ্ট লাগলো। একবার ভাবেন তো দিনটার কথা ‌ভিডিও তো আছেই। ১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ঢাকায় এসে মঞ্চে রুমালে চোখ মুছেছিলেন। কী অসাধারণ মূহুর্ত। সেসবের বদলে আজ বিমান থেকে একটা সবুজ আলো নামিয়ে লালগালিচা প্রদক্ষিণ করিয়ে যা দেখানো হলো হাস্যকর।

হ্যা, আমি জানি এমন নানা সব ইভেন্ট করে বহুজন আগামী এক বছরে বহু টাকা আয় করবে। রীতিমত প্রতিযোগিতা হবে। কোটি কোটি টাকা খরচ হবে এই রাষ্ট্রে। সবই হোক। কিন্তু এক বছর পর কী পাবে দেশ আর জাতি সেটা যেন আপনাদের মাথায় থাকে।

মনে রাখবেন আগামী এক বছর পর জাতি যেন সত্যিই নতুন করে বঙ্গবন্ধুকে আবিষ্কার করতে পারে। তরুণ প্রজন্ম যেন জানে বঙ্গবন্ধুকে। এই একটা বছর যেন টাকা খরচ আর তেলবাজির প্রতিযোগিতা না হয়। এর বদলে আসলেই যেন ভালো কিছু হয়।

মনে রাখবেন, বঙ্গবন্ধুকে বুকের ভেতর যত্ন করে রেখেছে এই দেশের কোটি জনতা। দয়া করে এই ভালোবাসাকে পণ্য বানাবেন না, পরিহাস বানাবেন না। এর বদলে আপনাদের কাজে যে না বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনটি যেন টেকসই হয়। সেটার যে বড়ই অভাব‌। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু। [ফেসবুক থেকে]

লেখক: সাংবাদিক, উন্নয়নকর্মী।


সর্বশেষ সংবাদ