বিনা ট্রানজিট ফি দিয়ে বিশ্ব ইতিহাস গড়ল সরকার

ডক্টর তুহিন মালিক
ডক্টর তুহিন মালিক  © টিডিসি ফটো

এবার ভারতের জন্য সবধরনের ট্রানজিট ফি, সবধরনের শুল্ক মউকুফ করে দিলো বাংলাদেশ সরকার! এখন থেকে ভারত বিনাশুল্কে, বিনা ট্রানজিট ফি-তে সম্পূর্ণ ফ্রিতে আমাদের বন্দরগুলো ব্যবহার করবে!

অথচ কোনো শুল্ক, ফি, ট্যাক্স ও চার্জ গ্রহণের ব্যবস্থা না রেখে ভারতকে ট্রানজিট দেয়া ‘ট্রানজিট চুক্তি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি’র পরিপন্থী। আজ আমাদের তাবেদার সরকার সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে ভারতকে সম্পূর্ণ ফ্রি ট্রানজিট দিয়ে দেশের স্বার্থের বিপরীতে পরিষ্কার অবস্থান নিলো। এভাবে ভারতকে ফ্রি ট্রানজিট দেয়া ‘আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদের’ সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

অথচ এর আগে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, “ভারতকে ট্রানজিট দিলে তার আয় দিয়ে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে।” অথচ আজ কোনো ধরনের শুল্ক, ফি, ট্যাক্স বা কোনো চার্জ ছাড়াই সম্পূর্ণ ফ্রিতে ভারতকে আমাদের বন্দরগুলো দিয়ে দেয়া হলো। এটা ২০০৯ সালের ২৪ মার্চ ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ‘প্রটোকল অন ইংল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড' নামক প্রটোকলেরও সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কেননা ওই প্রটোকলেও দু’দেশের লাভালাভের বিষয়টি সংযুক্ত ছিল। উপরন্তু এটা ‘ট্রানশিপমেন্ট ও ট্রানজিট পণ্যের কাস্টমস ব্যবস্থাপনা বিধিমালা’রও পরিপন্থী। কেননা, এই বিধিবিধান অনুযায়ী কাস্টমস স্টেশনের মাধ্যমে পরিবহন করা সব পণ্যের ওপর ফি আদায় করতে হবে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে সম্পাদিত এ ধরনের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, চুক্তি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ এবং এ সংক্রান্ত সব বিধিবিধান লঙ্ঘন করে, বিশ্বের ইতিহাসে এটাই হচ্ছে একমাত্র ট্রানজিট চুক্তি, যেখানে পণ্য পরিবহনে কোনো শুল্ক, ফি বা চার্জ দেয়ার বিধান রাখা হয়নি।

দেশবিরোধী সরকার দেশবিরোধী এই কালো চুক্তি বাতিল না করলে আগামী ১৬ই ডিসেম্বর প্রকাশিতব্য রাজাকারের তালিকায় প্রথম নামটি তাদেরই হবে।

 লেখক: আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ


সর্বশেষ সংবাদ