মানবিক মেধাবী চাই

  © ফেসবুক

মনুষ্যত্ব বিকাশের মাধ্যমে কোন মেধাবী সবার কাছে আর্শীবাদ হতে পারে। মেধার অপব্যবহার করলে নিশ্চয়ই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। শয়তান ইবলিশ খুব মেধাবী ছিলো। কিন্তু কর্মের কারণে সে অভিশপ্ত। মেধা কোন কাজে ব্যবহার করা হবে সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অনেকেই ধারণা করে মেধাবী ছাত্র হলেই সে সমাজে ভালো করবে, দেশে ভালো করবে। এই আশাবাদী চিন্তার নেতিবাচক উদাহরণ কিন্তু কম নয়। মেধাবী ছাত্রের মধ্যে মানবিকতা না থাকলে হিতে বিপরীত হবে এটা সহজেই অনুমান করা যায়।

পৃথিবীর বড় বড় অপরাধ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় অপরাধীরা প্রচুর মেধা দিয়ে সেসব অপকর্ম করেছে। সম্প্রতি আলোচিত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্ররা বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত হয়ে আছে, সেসব ছাত্ররা কিন্তু মেধাবী। দুধে ভেজাল মেশালে সেই দুধ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করে, তেমনি মেধাবীর সাথে অপকর্ম জড়িত হয়ে গেলে সেটা ব্যক্তি ও সমাজকে খুব ক্ষতিগ্রস্ত করে।

মেধাবী ছেলে মেয়েদের অভিভাবক হিসেবে আপনার যেমন অনেক খুশি হওয়ার কথা, তদ্রুপ সতর্কতা থাকাও অনেক জরুরি। সন্তান কোন পরিবেশে বড় হচ্ছে, কাদের সাথে সময় কাটাচ্ছে, কোন দর্শন লালন করছে ইত্যাদি বিষয়গুলো খেয়াল রাখা সচেতন অভিভাবকের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। পারিবারিক শিক্ষার মধ্যে জবাবদিহিতা ও নৈতিকতা নিয়ে আসতে হবে।

ছাত্রদের বুঝতে হবে পিতা মাতার কষ্টার্জিত টাকা পয়সা দিয়ে মেধাবী তকমা লাগিয়ে মা বাবাকে যেন আঘাত না দেয়। যেই সন্তান বাবা মায়ের মূল্য দিতে জানে না, সেই সন্তান সমাজের মূল্য দিবে কি করে? আর মেধাবী ছাত্রদের যারা ব্যবহার করে অপরাধের দিকে অগ্রসর করে তাদেরকে প্রতিহত করতে আত্মসচেতনতা খুব জরুরী।

নিজের ভালো নিজে না বুঝলে এরকম মেধাবী প্রশ্নবিদ্ধ হবে, ভয়ংকর হয়ে উঠবে। বর্তমান সময়ে আমরা পারিবারিক সম্পর্কে খুব বিচ্ছিন্নভাবে চলছি এবং পারিবারিক বন্ধন দৃঢ়তার অভাবে নৈতিকতার ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ছে। সময় এসেছে ঘরে বাহিরে আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে কথা বলার, পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনগুলো জোর দেওয়ার।

লেখক: প্রভাষক, হিসাববিজ্ঞান, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ