ছাত্ররাজনীতি করলেও পার্টটাইম কাজের সুযোগ দরকার

বরকত হোসাইন হাওলাদার
বরকত হোসাইন হাওলাদার  © সংগৃহীত

সারাবিশ্বে যখন এক দেশ অন্য দেশের সাথে পাল্লা দিয়ে নিজেদের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করায় ব্যাস্ত।গড়ে তুলছে দক্ষ জনশক্তি, নতুন নতুন প্রযুক্তি। একই সময় আমরা নিয়মের বেড়াজালে বন্দী।

আমি এদেশের ছাত্ররাজনীতির কথা বলছি। আমাদের দেশের মতো ছাত্ররাজনীতি সারাবিশ্বের কোনো দেশে এতো চাঙ্গা কিনা আমার জানা নেই। শুনেছি উন্নত দেশগুলোতে ছাত্ররা পড়াশুনার পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময় কাজ করে। আমাদের দেশ থেকে যারা বিদেশে পড়তে যায় তারাও অনেকেই কাজ করে পড়াশুনার খরচ মেটায়। আমাদের দেশে সেই প্রথা এখনো তেমন চালু হয়নি। অতিসাম্প্রতিক কালে সামান্য সংখ্যক ছাত্রছাত্রী পড়াশুনার পাশাপাশি কাজ করে যদিও পার্ট টাইম কাজ পাওয়া দুস্কর।

আমি এখানে একটা বিশেষ কারনে ছাত্ররাজনীতি টেনে আনবো। আমার সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কর্মী আছে ৫০ লাখের মতো। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে আছে সংগঠনের নেতা হতে হলে কোনো পেশা থাকতে পারবেনা। যে কারণে এই সংগঠনের বেশিরভাগ কর্মী ২৭ বা ২৯ বছর বয়স পর্যন্ত নিজেকে পেশা থেকে বিরত রাখে। কেউ পেশায় জড়ালেও তা গোপন রাখে বা রাখতে বাধ্য হয়। অনেকে আবার নিজের বা কর্মীদের চাহিদা মাটাতে অবৈধ কাজের আশ্রয় নেয়। ছাত্ররাজনীতির সাথে যারা জড়িত তাদের সারাদিন রাজনীতি করতে হয়না। ক্লাস,পড়াশোনা ও রাজনীতির বাইরেও তাদের অনেকটা সময় অলসভাবে কেটে যায়।সংগঠন করা কোনো পেশা নয়, এটা একটা আদর্শের চর্চা। একটা ছাত্র যখন ২৭ কিংবা ২৯ বছর বয়স পর্যন্ত যুদ্ধ করে খেয়াল করে যে সে কোনো কাজই শিখেনি। তখন হতাশায় নিমজ্জিত হয়। নিজের কাছে, পরিবারের কাছে, সমাজের কাছে অসহায় হয়ে পড়ে।

সময় এখন আমাদের ছাত্ররাজনীতি থেকে সেকেলে নিয়ম তুলে যোগ্যতার অংশ হিসেবে অবসর সময় কাজ বা চাকরি করা, সংগঠনের পক্ষ থেকে কাজ শেখানোর ব্যাবস্থা করা। ৫০ লাখ কর্মীর ১০ হাজারও যদি প্রতিবছর কোনো না কোনো কাজ শিখে সংগঠন থেকে বের হয় দেশ পাবে বিশাল অংকের দক্ষ জনশক্তি। হতাশা থেকে বাঁচবে ছাত্রসমাজের বড় একটি অংশ। সংগঠনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে ছাত্রসমাজের কাছে।কর্মীদের সময়ের সঠিক ব্যবহার হবে, অলস সময়ে সংঘটিত অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কমে আসবে, অবৈধ কাজের প্রতি আগ্রহ কমে যাবে।

লেখক: সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।


সর্বশেষ সংবাদ