প্রকৃতি ও মানুষ

  © টিডিসি ফটো

ছোটো বেলায় আষাঢ় শ্রাবণ মাসে দেখতাম মুষলধারে বৃষ্টি হতো; আর এখন এই সময়ে তাপদাহে জীবন যাত্রা অচল হয়ে পড়ছে। অনেক দেশে অতি তাপমাত্রায় মানুষ মারা গিয়েছে। বৃষ্টি ছাড়া ঋতুরাজ বর্ষা আজ রাজ্যহারা। শুধু বর্ষা নয়; খেয়াল করলে বুঝা যায় কোন ঋতু তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে প্রকৃতিতে আর আগমন করে না।

প্রকৃতি এখন আগের মতো চিরচেনা নয়। একসময় প্রকৃতির সাথে মানুষের বন্ধুত্ব ছিলো। মানুষ প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল ছিলো। আজ প্রকৃতি মানুষের উপর নির্ভরশীল। মানুষ চাইলে প্রকৃতি সুরক্ষিত রাখতে পারে; আবার মানুষ চাইলে প্রকৃতি ধ্বংস করতে পারে। পরিবেশের ভালো মন্দ মানুষের কৃতকর্মের ফল।

দিন দিন পরিবেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। মানুষ নিষ্ঠুরভাবে প্রকৃতি পরিবেশকে বিনাশ করছে। প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান প্রতিক্রিয়া আছে। নিউটনের সেই তৃতীয় সূত্র ভুলে গিয়ে মানুষ নিজের অকল্যাণ নিজেই ডেকে আনে। এই যে নির্বিচারে আমরা সৃষ্টিকর্তার সাজানো প্রকৃতির বিনাশ করছি, এতে চূড়ান্ত ভুক্তভোগী কে হচ্ছে? বিভিন্ন প্রাণীসহ মানুষ প্রকৃতির রোষানলে পড়ছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য ব্যহত হচ্ছে।

আমরা পরিবেশ দূষণ করছি হরদম। পানি দূষণ, বায়ু দূষণ, মাটি দূষণ, শব্দ দূষণ; চারদিকে দূষণ আর দূষণ। শুনতে খারাপ লাগলেও বলতে হচ্ছে পরিবেশ দূষণের সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষ দূষণ যেন বেড়ে যাচ্ছে। সংখ্যায় মানুষ যেভাবে বাড়ছে ভাল মানুষ সেভাবে বাড়ছে কি? মানুষ মানুষের ক্ষতি করছে। হত্যা, গুম, ধর্ষণ, দুর্নীতি, ঘুষ,অপসংস্কৃতি মারামারি ইত্যাদি প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

মানুষ যেন অশুভ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। যতসব অকল্যাণ, অন্যায় কর্ম সৃষ্টি হচ্ছে সবগুলোর জন্য দায়ী মানুষ। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সামাজিক পরিবেশ আজ মানুষের দিকে তাকিয়ে আছে। দুই পরিবেশকেই সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে সচেতন ভাল মানুষের বিকল্প নেই। নিজেদের ভালো রাখার জন্য চলুন প্রকৃতির সাথে মিতালি করি, পরিবেশ সুরক্ষা করি।

[লেখক: প্রভাষক, হিসাববিজ্ঞান, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ]


সর্বশেষ সংবাদ